হাসিনার বাজেটের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটের কোনো পার্থক্য নেই: রিজভী

0
0


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনারা (সরকার) ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেটের শেখ হাসিনার সঙ্গে পার্থক্য কী বলুন? শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল, আপনারাও দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুরে পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের উদ্যোগে দুস্থদের ঈদ সামগ্রী বিতরণকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

রিজভী বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো চলুক। দেশে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। নির্বাচনটা কবে হবে আর কত দেরি হবে জিজ্ঞেস করলে উপদেষ্টা চুপ করে থাকেন। একটা সময় সংস্কারকে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বি করেছে। সংস্কারকে সামনে নিয়ে এসেছে। এখন তাও বলছে না।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেওয়া বাজেট সম্পর্কে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এটা তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ড. ইউনূসের সরকার। এই সরকারের হাত দিয়ে কেন খারাপ কাজ হবে, এটা মানুষ জানতে চায়।

তিনি আরও বলেন, ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার এই বাজেটের ২৩ শতাংশ ওপরে যাবে শুধু প্রশাসনের বেতনের জন্য। আর সুদের টাকা যাবে ১৪ শতাংশ। তাহলে গরিব মানুষের জন্য কি রেখেছেন? লাভের গুড় তো পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে, তাহলে জনগণের জন্য কি করলেন?

রিজভী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম। কিন্তু আমাদের তো বেশি দরকার স্বাস্থ্য খাত ও শিক্ষা খাতে। সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা তো সরকারই দেখবে। ড. ইউনুস ক্ষমতায় আসার আগে অনেক কথা বলেছে। এখন তো তিনি নিজে ক্ষমতায়। তিনি তো গরিব মানুষকে দেখবেন। তিনি বলেছিলেন দরিদ্রকে জাদুঘরে পাঠান। এখন দেখছি উনার হাত দিয়ে লুটেরা, ব্যাংক ডাকাতরা যাদের হাতে কালো টাকা তারা সাদা করার সুযোগ পাচ্ছে। যদি শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কম থাকে তাহলে মানুষের কল্যাণে যে লড়াই ১৫ বছর ধরে হয়েছে, সর্বশেষ জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা আত্মহুতি দিয়েছে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে, এসবের কি হলো। দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ড. ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছে যে, আপনি বেশ ভালো চালান। তার হাত দিয়ে যে বাজেট সে বাজেট গরিবকে আরও গরিব করা এবং মুদ্রাস্ফীতি কমানোরটা তো দেখতে পাচ্ছি না। মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আরও চাপে পড়বে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমানকে শুধু নেতা বললে হবে না, তিনি একজন যুগ সৃষ্টিকারী নেতা। জনগণ তাকে নাম দিয়েছে ‘রাখাল রাজা’। তিনি মাইলের পর মাইল হেঁটে জনগণের দুর্দশা উপলব্ধি করেছেন। তিনি অনেক ভালো ভালো কর্মসূচি করেছেন। জিয়াউর রহমান জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান এমন সময় ক্ষমতায় এসেছেন একদিকে রাজনৈতিক সংকট এবং অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকট। ৭৪ এর দুর্ভিক্ষের সময় দরিদ্র মানুষ এক মুঠো ভাত পাচ্ছে না। এসব বিপর্যকর পরিস্থিতির পরে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি এগুলো রক্ষার মাধ্যমে কি করে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, একারণে তিনি সারাদেশে খাল খনন করেছেন। খাদ্য উৎপাদনের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অল্প সুদে তিনি ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে গোটা জাতিকে তিনি একটা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন।

রিজভী আরও বলেন, জিয়াউর রহমান মানুষের কাছে একজন অনুকরণীয় নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাকে দেশ বিদেশের আন্তজার্তিক শক্তি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে পছন্দ করে না, সেজন্য তাকে (জিয়াউর রহমান) আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে হত্যা করা হলো। তিনি কেন নিজ দেশকে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করাছেন, দেশকে কেন স্বাবলম্বী করছেন, কেন দেশকে গণতন্ত্র দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের নমুনা শেখ হাসিনার আমলে দেখেছি, তার বাপের আমলেও তাই ছিল। সে আইন করেছে, কালাকানুন অনেক করেছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। যারা কিছুটা মত প্রকাশ করেছেন, তাদের ঠিকানা হয়েছে কারাগারে। এই আমলের ব্যতিক্রম ছিল বিএনপির আমল। বিএনপির আমলে যে কোনো মানুষ নির্বিঘ্নে মত প্রকাশ করতে পারতো। গণতন্ত্রের নিশ্চয়তার দল হচ্ছে বিএনপি।

তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

কেএইচ/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।