এবার পবিত্র ঈদুল আজহায় মিলছে লম্বা ছুটি। এ উপলক্ষে পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে মৌলভীবাজার। দেশের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে এ জেলা। এখানে প্রতি বছর দেশ-বিদেশের লাখো পর্যটক ছুটে আসেন সবুজের সান্নিধ্যে। চা বাগান বেষ্টিত এ জেলায় এবারের ঈদে আশানুরূপ পর্যটক আসবেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে হোটেল ও রিসোর্টগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে।
পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, ৫ জুন থেকে ১৪ জুন টানা ১০ দিন ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মৌলভীবাজারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পর্যটক যান শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে।
এছাড়া পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, উঁচু নিচু সবুজ চা বাগান, মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি কমপ্লেক্স, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, বাইক্কা বিল, হামহাম জলপ্রপাত, মণিপুরী পল্লি, খাসিয়া পুঞ্জি, হাকালুকি হাওর, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, নীলকণ্ঠ টি কেবিন, সীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা, পৃথিমপাশা নবাববাড়ি, পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট, বর্ষিজোড়া ইকোপার্কসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান।
এছাড়া মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনু ব্যারেজ-মাতারকাপন সুইস গেট, মনু নদী তীরবর্তী শহরের শান্তিভাগ ওয়াকওয়ে, বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক, হজরত শাহ মোস্তফা রহ. এর মাজার, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, হামহাম জলপ্রপাত, লাসুবন, শমসেরনগর গলফ মাঠ, ক্যামেলিয়া লেক, আদমপুর বনবিট, খাসিয়া পুঞ্জি, পদ্মছড়া চা বাগান লেক, বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, হাকালুকি হাওর, পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট, আগর বাগান, শ্রীমঙ্গলের মৎস্য অভয়াশ্রম বাইক্কা বিল, হাইল হাওর, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বধ্যভূম ৭১, দার্জিলিং টিলা, টি মিউজিয়াম, ভাড়াউড়া চা বাগান লেক, সাত কালার নীল কণ্ঠ টি কেবিন, সীতেশ বাবুর মিনি চিড়িয়াখানা, হরিণ ছড়া গলফ মাঠ, লাল টিলা, গরম টিলা, মণিপুরী পল্লী, রাজনগরের কমলা রানির দীঘি, বরথল চা বাগান লেক, কুলাউড়ার পৃথিমপাশা নবাববাড়ি, রবিরবাজার জামে মসজিদ, জুড়ীর কাশ্মির টিলা, লাঠি টিলাসহ জেলার বিভিন্ন চা বাগানও অনেকের কাছে পছন্দ।
শ্রীমঙ্গলের লেমন গার্ডেন রিসোর্টের মালিক সেলিম মিয়া বলেন, রাধানগর ও ডলুবাড়ি এলাকার সব রিসোর্টই আগাম বুকিং পেয়েছি। আমাদের লেমন গার্ডেন রিসোর্টে ৮-১৪ তারিখ পর্যন্ত প্রায় সব কক্ষই বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের কথা ভেবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছি।
ট্যুর অপারেটর অ্যান্ড ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম জানান, ঈদের এই লম্বা ছুটিতে বিদেশি পর্যটক নেই বললেই চলে। আর বিদেশি পর্যটক না এলে ট্যুর গাইডদের কম বুকিং থাকে। তবে হোটেল রিসোর্টগুলো ভালো আগাম বুকিং পেয়েছে।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সদস্য সচিব কাজী সামছুল হক বলেন, জেলার বেশিরভাগ রিসোর্ট শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত। এসব রিসোর্ট শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে। ৬ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ এজন্য পর্যটকরা আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের পরিদর্শক মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ঈদের লম্বা ছুটিতে প্রচুর পর্যটক সমাগম হবে। আমরা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করেছি। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে নজরদারি রাখছি।
পর্যটকের নিরাপত্তার বিষয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করে গন্তব্যে ফিরতে পারেন এ জন্য জেলা পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ কাজ করছে।
ওমর ফারুক নাঈম/জেডএইচ/জেআইএম