চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আধুনিক পদ্ধতিতে পলি সেডে চারা উৎপাদনে ৩-৫ লাখ টাকা আয় করছে কৃষক পরিবারগুলো। গত ২-৩ বছর ধরে কৃষকেরা সুফল পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তা-ই নয়, এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন উপজেলা কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
জানা যায়, এ প্রক্রিয়ায় চারা উৎপাদনে গাছের কোনো ক্ষতি হয় না। ব্যাকটেরিয়াও প্রবেশ করতে পারে না। চারাগাছের শিকড় থাকে মজবুত ও অক্ষত। বিশেষ করে চারাগাছের শিকড় ছিঁড়ে যাওয়ায় গাছ বেশিদিন টেকে না। ফলনও তেমন একটা ভালো হয় না।
আধুনিক পদ্ধতিতে পলি সেডের মাধ্যমে চারা উৎপাদনে গাছ থাকে রোগমুক্ত। মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে অনেক কম। ফলে এ পদ্ধতির কথা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন স্থান থেকে চারাগাছ কেনার জন্য ছুটে আসেন পাইকাররা। তারা এ অঞ্চল থেকে লাখ লাখ চারা সংগ্রহ করে ট্রাক ও গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন।
এতে কৃষকেরা বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। সীতাকুণ্ড পৌরসভার নুনাছড়া এলাকার উদ্যোক্তা নাঈমা এগ্রো অ্যান্ড নার্সারির মালিক মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমার ২টি সেড আছে। তার মধ্যে নতুন পদ্ধতিতে পলি সেডে প্রায় ৩০ প্রজাতির চারা আছে। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে ৩ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। মাসে ২ বার হারভেস্ট করা যায়।’
মুরাদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রহমত নগর গ্রামের সৌখিন উদ্যোক্তা সীতাকুণ্ড এগ্রো অ্যান্ড নার্সারির মালিক মো. ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি গত ৩ বছর ধরে পলি সেডে চারা উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন। অন্য মৌসুমে কম-বেশি চারা উৎপাদন হলেও আগস্ট থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চারা উৎপাদন হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ‘বার্ষিক সব খরচ বাদ দিয়ে আমার ৫ লাখ টাকার মতো আয় হয়। এখান থেকে চারা কিনে চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামগঞ্জে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকার ও কৃষক পরিবারের সদস্যরা।’
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘উপজেলায় মোট ৭ জন কৃষি উদ্যোক্তা পলি সেডে চারা উৎপাদন করছেন। চারা উৎপাদন করে তারা লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। আগে মাটিতে চারা উৎপাদনে গাছগুলো সংগ্রহ করার সময় শিকড় নষ্ট হয়ে যেতো। এখন সেই ঝুঁকির আশঙ্কা নেই। পলি সেডে চারা উৎপাদনে মৃত্যুর হার কমেছে। ফলে সব সবজির উৎপাদন বেড়েছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ।’
এসইউ/জিকেএস