শিক্ষার্থীদের অগ্রহণযোগ্য ও অসম্মানজনক আচরণ করায় পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি করেছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম মিয়া।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজার কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি।
পদত্যাগপত্রে উপাচার্য লিখেছেন, দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজকে আমি এ চিঠি লিখছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী অগ্রহণযোগ্য ও অসম্মানজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় আমি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, আপনি আমার পদত্যাগপত্র সদয়ভাবে গ্রহণ করবেন।
রাত ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত হতে উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়ার সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে জাগো নিউজ। তিনি পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ নিয়ে তিনি বাড়তি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক ছাত্রীর বাবা মারা যান। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়ার পর ওই ছাত্রী বিভাগে মিড টার্ম পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করলে তার কাছে ডেথ সার্টিফিকেট দাবি করে বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল হুদা।
বিষয়টি নিয়ে ওই ছাত্রী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তার এ স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর শিক্ষার্থীরা শিক্ষক নুরুল হুদার পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলনে নামেন।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী—শনিবার সকাল ৯টা থেকে তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পরে দুপুরের দিক থেকে তারা আমরণ অনশনে বসেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাতে একযোগে উপাচার্য, ডিন ও বিভাগীয় প্রধানরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
এদিকে, তার সঙ্গে ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ আরও ১০ জন কর্মকর্তা স্ব স্ব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তারা নিয়ম অনুযায়ী—উপাচার্য বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে তারা লেখেন, কিছু শিক্ষার্থীর অন্যায় দাবি-দাওয়ার প্রতিবাদে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীরা ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রশাসনের বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করছি।
এতে সই করেছেন মো. রেজওয়ান খান, এসওএসই অনুষদের ডিন ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসান সারওয়ার, মোহাম্মদ ওমর ফারুক, খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. কে মাসুকুর রহমান, ড. তাহমিনা ফয়েজ, ড. সুমন আহমেদ, ড. জান্নাতুন নুর মুক্তা, ড. এস এম রফিকুল ইসলাম, ডিরেক্টর (কো-অর্ডিনেশন) অধ্যাপক এ এস এম সালাহউদ্দিন।
রাতে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা, চলছে বিক্ষোভ
শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট তিন দফা দাবি না মেনে একযোগে পদত্যাগের মাধ্যমে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা।
অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একজন শিক্ষকের পদত্যাগ বা অব্যাহতিসহ খুবই ছোট কয়েকটি দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। দাবি মানতে গড়িমসি করায় উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন তারা। অথচ সেই দাবি না মেনে উপাচার্যসহ ১১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তার পদত্যাগ করাটা সাজানো নাটক। তারা পদত্যাগের মাধ্যমে ইউআইউতে অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে চান। তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এএএইচ/এমআরএম