ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে কেঁচো বা এই ধরনের পোকামাকড় ও ভয়াবহ ইকোলাই ভাইরাস পাওয়ার পরও ওয়াসা নির্বিকার বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। রোববার (২০ এপ্রিল) ওয়াসার দূষিত পানি, ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নগরবাসী বিষয়ে এবি পার্টি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতি বছর পানি নিয়ে একই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও এর কোনো সমাধান নেই। বছরের পর বছর ধরে কোনো সরকারই বিশুদ্ধ খাবার পানির নিশ্চয়তা তৈরি করতে পারেনি। ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যেসব দুর্নীতিবাজ কেঁচো বা পোকামাকড় বসে আছে তাদের অপসারণ ব্যতীত নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে দূষিত পানির ভোগান্তি ও তার সমাধান বিষয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসরীন সুলতানা মিলি। তিনি বলেন, প্রতি বছরই গ্রীষ্মের শেষ এবং বর্ষার শুরুতেই ওয়াসার পানি হয়ে ওঠে নোংরা পোকামাকড়ের প্রজননক্ষেত্র। দূষণের পরিমাণ এতটাই বাড়ে যে এটার কারণে রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু এটা নিয়ে কোনো সমাধান চিন্তা করা হয়নি। ২০১৯ সালে একজন আইনজীবীর রিটে হাইকোর্ট ডিভিশন ৭ দিনের মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন ওয়াসার পানির স্যাম্পলে মল, মূত্র এবং অ্যামোনিয়ার উপস্থিতি কেন পাওয়া গেছে? যার উত্তর আজ প্রায় ৭ বছরেও পাওয়া যায়নি যা অনাকাঙ্ক্ষিত।
ঢাকা শহরে শীতের পরেই শুরু হয় অপরিকল্পিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কম্পিটিশন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাতে প্রায়ই দেখা যায় সুয়ারেজ এবং পানির লাইন ফুটো হয়ে এক হয়ে গেছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ডামাডোল আর স্মার্ট বাংলাদেশ এর ভিড়ে আমরা একটি বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সাপ্লাই চেইন স্থাপন করতে পারিনি যা আমাদের ব্যর্থতা।
ওয়াসার আগের এমডি তাকসিম এ খানের মতো বর্তমান এমডিরও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কোনো দৃশ্যমান কাজ করতে দেখিনি। হাজার হাজার নাগরিকের যেখানে ই-কোলাই জীবাণু এবং পোকামাকড় দিয়ে পূর্ণ পানি খেয়ে নাভিশ্বাস উঠার জোগাড় তখন ওয়াসার এমডির পক্ষ থেকে সমাধান তো দূরের কথা কোন বক্তব্যও পাইনি।
জুরাইন, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের এ নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এই এলাকার বাসিন্দারা। জুরাইনের স্থানীয় মসজিদের গভীর নলকূপ এখন শেষ ভরসা। সেখান থেকে নামমাত্র মূল্যে পানি কিনে তারা চলছেন বছরের পর বছর। ওয়াসার বিল দেওয়ার পরও এরকম নাগরিক ভোগান্তি জুলাই অভ্যুত্থান এর স্পিরিটের সম্পূর্ণ বিপরীত।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, এ বি এম খালিদ হাসান, শ্যাডো বিষয়ক সম্পাদক আব্বাস ইসলাম খান নোমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাসেত মারজান।
এএএম/এমআইএইচএস