বিগত এক যুগে জাতীয় বাজেটের আকার বাড়লেও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ। ফলে এ খাতে অর্থনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টিতে জাতীয় বাজেটে ন্যূনতম এক শতাংশ বরাদ্দের দাবি উঠেছে।
সংস্কৃতিকর্মীরা জানান, গত এক দশকে বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশের ওপরে ওঠেনি।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে সংস্কৃতি খাতের বাজেট পর্যালোচনা ও প্রস্তাবনা শীর্ষক সেমিনারে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন সংস্কৃতিকর্মীরা। সেমিনার আয়োজন করে থিয়েটার আর্টিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ঢাকা।
বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ও সংগঠনের ভাতা বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা, সংস্কৃতি পেশাজীবীদের পেনশন সুবিধা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সেমিনারে ধারণাপত্র পাঠ করেন সংস্কৃতিকর্মী তৌফিকুল ইমন। তিনি বলেন, চলতি বছরের বাজেটে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট ছিল শূন্য দশমিক ৯৭৭ শতাংশ। বাজেটের আকার বাড়লেও সংস্কৃতির কাঠামো বাড়ছে না। যতটুকু বরাদ্দ হচ্ছে তা অবকাঠামো নির্মাণে সীমাবদ্ধ থাকছে। এজন্য বাজেটে সংস্কৃতি খাতের বরাদ্দ জনআকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারছে না।
নাট্য অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম বলেন, সংস্কৃতি খাতে ন্যূনতম এক শতাংশ বরাদ্দের দাবি উঠলেও তা সব সময়ই দাবিই থেকে যায়। এবার অরাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায়। তাদের কাছে বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানাই।
নৃত্যশিল্পী লুবনা মরিয়ম বলেন, আমাদের সংস্কৃতি ব্যবস্থাপনা সঠিক করতে হবে। এজন্য ডেটা ফর কালচার প্রয়োজন। আমরা অনুদানের জন্য বসে নেই, ডেটা প্রয়োজন আছে। ডেটা ছাড়া আমাদের কথা কেউ শুনবে না।
সংগীত শিল্পী শেখ জসিম বলেন, সংস্কৃতি খাতে বাজেটের কোন খাতে কীভাবে কী খরচ হয়েছে, তা জানার অধিকার আমাদের আছে। কিন্তু কোনো সরকার আমাদের সেটা জানায় না।
সংগীত শিল্পী সুজিত মোস্তফা বলেন, বাংলাদেশের শিল্পীরা অবহেলিত, অপমানিত একটা সমাজ। আমরা আরও বড় একটা হুমকির মুখে আছি, সেটা হলো ইন্টারনেটের বিস্তৃতি। ওটিটি, ইন্টারনেটে প্রচুর নাটক হচ্ছে। থিয়েটারে কয়জন আসে সেটা আমি জানি না। নতুন কনসেপ্ট এসেছে ভাইরাল। অশিক্ষিত ছেলেমেয়েরা টিকটক করছে। তাদের সংস্কৃতির প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। আমাদের সংস্কৃতি রক্ষা করতে সরকারের প্রণোদনা দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, নাট্যকার ও নাট্য পরিচালক মামুনুর রশীদ, নাট্য অভিনেতা তারিক আনাম খান প্রমুখ।
এসএম/কেএসআর/জিকেএস