অনেকেরই ধারণা ছিল বাংলার স্বাধীনতার প্রতিশোধ হিসেবে বংবন্ধুকে হত্যা করেছে পাক বাহিনী। তবে গুজব ছাপিয়ে বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি মুক্ত দেশে পা রাখেন প্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের মাটিতে ফিরে পরিবার নয় আগে ছুটে যান মানুষের কাছে।
তাঁকে এক নজর দেখতে তেজগাঁও বিমান বন্দর থেকে রেস্কোর্স ময়দান পর্যন্ত জমায়েত হয় লাখো মানুষ। দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি ঘোষণা দেন স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার।
স্বাধীনতার ঘোষণার প্রায় দশ মাস পর লন্ডনের প্লেজিরাস হোটেলে দেখা মিলে বাঙালির মুক্তির মহানায়কের। বেঁচে আছেন কিনা দেশেই বা ফিরবেন কি না এমন সব শঙ্কা দূর করে বিশ্ববাসীর সামনে আসেন বাংলার শেখ মুজিব।
শঙ্কা ছিল শেখ মুজিবকে হত্যার মাধ্যমে পরাজয়ের চূড়ান্ত প্রতিশোধ নেয়া হতে পারে। তবে বিশ্ববাসীর চাপে তাঁকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। যুক্ত্রাজ্য থেকে বিশেষ বিমানে পৌঁছেন ভারতে নয়া দিল্লী। কৃতজ্ঞতা জানান মুক্তিযুদ্ধের পরম মিত্রকে।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টাকে বরণ করতে তেজগাঁও বিমানবন্দর সকাল থেকেই ছিল জনসমুদ্র। নিরাপত্তা নিশ্চিতে হিমশিম অবস্থা মিত্র বাহিনীর। দুপুরে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি মাটি স্পর্শ করতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে জনতা। ২৮৯ দিন পাকিস্তানের বন্দী দশা থেকে মুক্ত জাতির জনক তখন স্বাধীন দেশের নাগরিক। বিজয় অর্জিত হয় মাত্র ২৫ দিন আগে। কিন্তু সেই বিজয় যেন পূর্ণতা পাচ্ছিল না বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে।
১০ জানুয়ারি তার আগমনে রাস্তার দু ধারে আনন্দে আত্মহারা জনতা। মাত্র চার কিলোমিটার দুরত্বের রেস্কোর্সে পৌছাতে সময় লেগেছিল আড়াই ঘন্টা। যেখানে অপেক্ষা করছিলেন দশ লাখ মানুষ। সেই জনসমুদ্রে বাঙালির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান আবেগে আপ্লুত রাজনীতির মহাকবি।
দেশকে পুণর্ঘটন করতে জাতির পিতা আহ্বান জানান ৭ কোটি বাঙালিকে এক হতে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে প্রয়োজন ছিল একক বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। স্বাধীন দেশের মাটিতে তাই জাতির পিতার ফিরে আসা ছিল অনিবার্য।
আরো পড়ুনঃ মার্কিন কংগ্রেসে হামলার সময় ভারতীয় পতাকা উত্তোলন নিয়ে তোলপাড় | US & India