প্রতি বছরই তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যান। পরিবারের সব সদস্যরা মিলে নতুন কোনো জায়গায় উৎসবে মাতেন। এবারও তারা ঘুরতে বের হয়েছিলেন। কিন্তু এবার আর পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে ভালোভাবে ফেরা হয়নি। পরিবারের ৫ সদস্যই ফিরেছেন লাশ হয়ে। আর কয়েকজন জীবিত ফিরেলও তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
যে বাড়িটিতে সকালে ছিল উৎসবের আমেজ, বিকেলেই সেই বাড়িটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসীও শোকাহত। মরদেহ দেখে চোখের পানি মুছতে মুছতে ফিরে যাচ্ছেন। সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষাও কারো নেই।
নারায়ণগঞ্জ থেকে ফরিদপুরে বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন একই পরিবারের ৫ জন। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন এক শিশুসহ আর দুইজন। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় ফরিদপুর সদরের গেরদা এলাকার রাজবাড়ী-ভাঙ্গা রেলক্রসিংয়ে তাদের মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ৩ জনসহ মোট ৫ জন নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের ভূইয়াপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী আবু সাঈদের স্ত্রী আতিফা রহমান ভূঁইয়া, ছোট বোন ফাহমিদা শারমিন মুন, মুনের স্বামী ব্যবসায়ী মামুন চৌধুরী লিটন, চাচাতো বোন সাজিয়া আফরিন সাজু ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী উম্মে মাহমুদা রিংকু।
গুরুতর আহত অবস্থায় আবু সাঈদের ভাগ্নি শিশু তাজরিনকে রাজধানীর আসগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর মাইক্রোবাসচালক জিন্নাহও ফরিদপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দুপুরের পর এ খবর ভূঁইয়াপাড়ায় এসে পৌঁছালে পুরো বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা ছুটে আসেন ওই বাড়িতে।
তাজবীর রহমান নামে এক আত্মীয় বলেন, ব্যবসায়ী আবু সাঈদের একটি প্রাইভেটকার এবং তার ভগ্নিপতি মামুন চৌধুরী লিটনের ব্যক্তিগত মাইক্রোবাস নিয়ে তারা মঙ্গলবার ভোরে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে তারা আবু সাঈদের শ্বশুরবাড়িতে সাক্ষাৎ শেষে নারায়ণগঞ্জে ফিরছিলেন। ফেরার পথেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, নিহত সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে মরদেহ বাড়িতে নেওয়ার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়েছে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এফএ/এএসএম