এ তো চিরচেনা বাংলাদেশই। দু্ইশর আগে অলআউট হওয়া যে দলের স্বভাব। জ্যামাইকা টেস্টেও ব্যতিক্রম বাংলাদেশকে দেখা যায়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিং করে প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে গুটিয়ে গেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
জবাবে দিতে নেমে ১ উইকেটে ৭০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্বাগতিকরা পিছিয়ে এখন ৯৪ রানে। উইকেটে আছেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েট (১১৫ বলে ৩৩) ও কেসি কার্টি (৬০ বলে ১৯)।
স্থানীয় সময় রোববার দলীয় ২৫ রানের মাথায় ওপেনার মিকেইল লুইসের উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নাহিদ রানার বলে উইকেটরক্ষক লিটনের হাতে ক্যাচ হন তিনি। ৪৭ বলে করেন ১২ রান। এরপর উইকেটে সেট হন ব্রাথওয়েট ও কার্টি।
এর আগে বাংলাদেশের ইনিংসে ১৫.৫ ওভার বল করে মাত্র ৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার জাইডন সিলস। ওভারপ্রতি ডানহাতি ক্যারিরীয় পেসার খরচা করেছেন ০.৩১ রান। যা টেস্ট ক্রিকেটে গেল ৪৭ বছরের সবচেয়ে কিপটে বোলিংয়ের রেকর্ড (কমপক্ষে ৬ ওভার বল করে)।
২ উইকেটে ৬৯ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ছিল ২ উইকেটে ৮২ রানে। এরপর হঠাৎ করে পতন শুরু হয়। পরবর্তী ৩৪ বলের মধ্যে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড লেখা ৯৮ রানে ৬ উইকেট। দ্রুত পতন হওয়া ৪ উইকেটের ৩টিই তুলে নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার শামার জোসেফ।
৮৯ বল মোকাবেলা করে ২ বাউন্ডারিতে মাত্র ২২ রান করেন শাহাদাত হোসেন দিপু। ২৪.৭১ স্ট্রাইকরেটের ইনিংসটি শেষ পর্যন্ত বড় করতে পারেননি তিনি। শামার জোসেফের বলে ডিফেন্ড করেও বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় ডানহাতি এই ব্যাটারকে।
লিটন দাস নয় বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। এখনও তার শট সেন্স আছে আগের মতোই। আরও একবার দৃষ্টিকটু আউটে উইকেট বিলিয়ে দেন ক্লাসিক্যাল এই ব্যাটার। ফুটওয়ার্ক ছাড়াই শট খেললেন, যার ফল প্রথম স্লিপে ক্যাচ। ৬ বলে ১ রানে সাজঘরে ফেরেন লিটন।
এরপর তরুণ জাকের আলীও ১ রানে আউট হয়েছেন। শামার জোসেফের পেসে তার ছিল সফট ডিসমিসাল। বেরিয়ে যেতে থাকা বাউন্সারে অযথা পুল খেলতে গিয়ে আউট হন জাকের। বল তার ব্যাটের পর কাঁধে লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে।
সতীর্থদের এই আসা যাওয়ার মিছিল দেখে যেন ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন সাদমান ইসলামও। শামার জোসেফের বলে তিনি ব্যাট পেতে দিলে বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের কাছে। ১৩৭ বলে ৫ চার আর ১ ছক্কায় তার ৬৪ রানের ইনিংসটির সমাপ্তি তাতেই। ৯৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশ।
এরপর বোলার তাইজুল ইসলামকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। লাঞ্চের আগে প্রায় ১৪ ওভার কাটিয়ে ২৪ রান তোলেন। ১১৬ বলে তাদের ৪১ রানের জুটিটি শেষ পর্যন্ত ভাঙেন আলজেরি জোসেফ। ৬৬ বলে ১৬ রান করে ফেরেন তাইজুল।
দলীয় ১৩৯ রানে তাইজুল ফেরার পর আর কারো ওপর ভরসা করতে পারেননি মিরাজ। তাসকিন আহমেদ করেন ৮। শেষ পর্যন্ত মিরাজ জেডেন সিলসের শর্ট বলে চালাতে গিয়ে টপ এজ হয়ে ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ হন। ৭৫ বলে ২ বাউন্ডারিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক করেন ৩৬ রান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেডেন সিলস মাত্র ৫ রান দিয়ে নেন ৪টি উইকেট। ৩ উইকেট শিকার শামার জোসেফের।
এমএইচ/জেআইএম