ফ্লাইটে ‘বারবার খাবার চেয়ে’ ক্রেবিন ক্রুদের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ নাগরিককে পুলিশে সোপর্দ করার ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সোমবার (১১ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এর ব্যাখ্যা দেয় সংস্থাটি।
বিমানের ব্যাখ্যায় বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিমানের ফ্লাইটের সিলেটগামী এক যাত্রী ফ্লাইটে ওঠার পর কেবিন ক্রুদের বারবার ডাকতে থাকেন এবং খাবার দিতে বলেন। কেবিন ক্রুরা তাকে নির্ধারিত মিলের বাইরেও বেশ কয়েকবার খাবার ও ড্রিংকস সরবরাহ করেন। পরবর্তীতে তিনি কিছুক্ষণ পর আবারও এক কেবিন ক্রুকে ডাকেন। সেই ক্রু তখন ফ্লাইটের অন্য যাত্রীদের খাবার পরিবেশনে ব্যস্ত থাকায় আসতে কয়েক মিনিট দেরি হয়। এরপর ওই যাত্রী উত্তেজিত হয়ে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। এক পর্যায়ে দায়িত্বরত কেবিন ক্রুকে অশালীন ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তিনি ওই নারী কেবিন ক্রুকে ধাক্কা দেন এবং গায়ে হাত তোলেন। তখন এক পুরুষ কেবিন ক্রু তাকে নিবৃত করতে গেলে তিনি তার টাই টেনে ছিঁড়ে ফেলেন।
বিমানের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আশপাশের অন্য যাত্রীরা তাকে থামাতে গেলে তিনি তাদের প্রতিও ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করেন এবং শারীরিক হেনস্তা করেন। পরে কেবিন ক্রুরা বিষয়টি পাইলটদের অবহিত করলে ক্যাপ্টেন ওই যাত্রীকে বুঝিয়ে সিটে বসানোর নির্দেশনা দেন। পাইলট ঘোষণা দেন, যদি তিনি নিবৃত না হন, তাহলে ফ্লাইট নিকটস্থ অন্য কোনো এয়ারপোর্টে জরুরি অবতরণ করানো হবে। পাশাপাশি কেবিন ক্রুদের ডিউটি পজিশনও পরিবর্তন করে দেওয়া হয়।
বিমানের দাবি, অনেকে প্রচার করছেন তাকে যথাযথ খাবার দেওয়া হয়নি। এটি ঠিক নয়, ফ্লাইটের যাত্রীদের নিয়ম অনুযায়ী সব ধরনের সার্ভিস সময়মতো দেওয়া হয়েছে। ওই যাত্রীকে নির্ধারিত মিলের বাইরেও অতিরিক্ত সার্ভিস দেওয়া হয়েছে। সার্ভিস দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ব্যত্যয় হয়নি। প্রচার করা হচ্ছে ফ্লাইটের ভিতর যাত্রীকে বেঁধে রাখা হয়েছে, যা সঠিক নয়। যাত্রীকে নিবৃত করতে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং তাকে বুঝিয়ে নিবৃত করা হয়। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর ওই যাত্রীকে সিভিল এভিয়েশনের সিকিউরিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি তাকে থানায় হস্তান্তর করলে থানা থেকে পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিমানের দাবি, ওই যাত্রী কেবিন ক্রু ও অন্য যাত্রীদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, সে তুলনায় এভিয়েশন পলিসি (থ্রেট লেভেল) অনুযায়ী বিমানের পক্ষ থেকে যাত্রীর বিরুদ্ধে কোনো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে যাত্রীদের প্রতি বিমান সর্বদা উদারনীতি গ্রহণ করে থাকে।
এমএমএ/কেএসআর