সিলেটে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (১০ নভেম্বর) বাদ আসর নগরীর বীরদল পুরানফৌদ জামে মসজিদে জানাজা শেষে পঞ্চায়েত কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় শত শত মানুষ অংশ নেয়।
মুনতাহা সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
এর আগে দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় স্বজনদের কান্নায় আকাশ ভারি হয়ে ওঠেন।
গত ৩ নভেম্বর দুপুরবেলা শিশু মুনতাহা পাশের আব্দুল ওয়াহিদের বাড়ির শিশুদের সঙ্গে খেলতে যায়। বিকেল পর্যন্ত শিশু সে বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুজি করেন। না পেয়ে বাবা শামীম আহমদ কানাইঘাট থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেন। মুনতাহা নিখোঁজের পর থেকে থানাপুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং তার আত্মীয় স্বজন সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাননি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে মুনতাহা নিখোঁজের বিষয়টি।
মুনতাহার পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার রাতে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষক শামীমা বেগম মার্জিয়াকে থানায় নেয় পুলিশ। এসময় তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে মার্জিয়ার বাড়িতে মুনতাহার সন্ধানে তল্লাশি চালান স্থানীয়রা। রাত সাড়ে তিনটার দিকে মার্জিয়ার বাড়ির আশেপাশে তল্লাশি চালানোর এক পর্যায়ে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন। তাকে আটকাতে চাইলে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় স্থানীয়রা গিয়ে তার কুলে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান। পরে মার্জিয়ার মাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।
শিশু মুনতাহা হত্যায় সাবেক গৃহশিক্ষক শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫) ও তার মা আলিফজান বিবিসহ (৫৫) চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রোববার ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও শেষ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মার্জিয়া ও তার মা ছাড়াও বাকি দুজন হলেন, একই বাড়ির মৃত ছাইদুর রহমানের ছেলে ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও মামুনুর রশিদের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫)। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কানাইঘাট থানায় একটি মামলা করেছেন মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আহেমেদ জামিল/আরএইচ/জিকেএস