দেশজুড়ে আলোচিত সিলেটের শিশু মুনতাহা হত্যায় ঘাতক তিন নারীর বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ওই বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জিনিসপত্র লুট করে নেওয়া হয়।
এদিকে মুনতাহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আরও এক নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন- নিজাম উদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন ও নাজমা বেগম। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পুরো পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এর আগে রোববার (১০ নভেম্বর) গভীর রাতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি নালা থেকে মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মুনতাহার প্রতিবেশি ও সাবেক গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়া, তার মা আলিফজান বিবি ও নানী কুতুবজান বিবিকে আটক করে পুলিশ।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা উদঘাটন করতে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়াকে থানায় নেয় পুলিশ। এ সময় তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে মার্জিয়ার বাড়িতে মুনতাহার সন্ধানে তল্লাশি চালান স্থানীয়রা। রাত সাড়ে তিনটার দিকে মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে তল্লাশি চালানোর এক পর্যায়ে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন। এ সময় তাকে আটকাতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা গিয়ে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান। পরে মার্জিয়ার মাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।
এদিকে মুনতাহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত তিন নারীর ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে অগ্নিসংযোগও করেন তারা।
সিলেট জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সম্রাট তালুকদার বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন। পরে বিস্তারিত বলা যাবে।
গত ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরে শিশু মুনতাহা। পরে আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু বিকেলে বাড়ি না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মুনতাহার বাবা কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুনতাহা নিখোঁজের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। তার সন্ধানে ঘোষণা করা পুরস্কারও। তবুও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না শিশুটির।
আহমেদ জামিল/এফএ/এমএস