শেষের বিক্রির চাপে পতনে শেয়ারবাজার

0
2


টানা তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর রোববার (৩ নভেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে প্রধান মূল্য সূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। মূলত শেষদিকে এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়ানোর কারণে এই দরপতন হয়েছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দাম কমার তালিকা বড় হলেও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এতে এ বাজারটিতে মূল্য সূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এর আগে অব্যাহত দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হয়ে গত সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। এ পরিস্থিতিতে রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় লেনদেনের এক ঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। কিন্তু দুপুর ১২টার পর হঠাৎ করেই এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে একদিনে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে প্রধান মূল্য সূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮১টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

প্রধান মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১২৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

শেয়ারবাজারের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, আজ শেয়ারবাজারে যে দরপতন হয়েছে তা স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন। গত তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজার টানা ঊর্ধ্বমুখী ছিলো। এতে বেশি কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে যাদের কম দামে শেয়ার কেনা ছিল তারা মুনাফা তুলে নিতে বিক্রি করেছেন। এতে বিক্রির চাপ কিছুটা বেড়ে মূল্য সংশোধন হয়েছে।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ১১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের ১১ কোটি ১০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী আঁশ, অগ্নি সিস্টেম, ফারইস্ট নিটিং, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ইসলামী ব্যাংক, টেকনো ড্রাগস এবং ইউনিক হোটেল।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭২টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

 

এমএএস/এসআইটি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।