প্রত্যেক ঘণ্টায় পানি বাড়ছে সুনামগঞ্জে, জেলার ১২ উপজেলা ইতোমধ্যেই আশেপাশের সব এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন। ঘর বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন বন্যাদূর্গতরা কিন্তু সেখানেও নেই কোনো নিশ্চয়তা। এমনকি সরকারি কোনো ত্রাণ তৎপরতাও নেই। এই অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে সাহায্যের আকুতি জানিয়েছেন সুনামগঞ্জবাসী।
প্রায় সমগ্র সুনামগঞ্জই ডুবে গেছে, কোথাও কোনো ইন্টারনেট বা বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। স্থানীয়রা নৌকায় করেও এখন কোথাও যেতে পারছেন না কারণ দিক নির্দেশনা ঠিক করতে পারছেন না তারা। যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে পাওয়ার স্টেশন। আর তা হলে পুরো সুনামগঞ্জ হয়ে পড়বে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন , পানির পাশাপাশি জেলাটি ডুবে যাবে অন্ধকারেও।
ইতোমধ্যেই অনেকটা বিচ্ছিন্ন সুনামগঞ্জের ইন্টারনেট সংযোগ ও মোবাইলের নেটওয়ার্ক। ফলে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না দুর্গতদের সাথে। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থায় আছেন সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামবাসীরা। তাদের অধিকাংশের খাবার ইতোমধ্যেই ফুরিয়েছে, নেই পানযোগ্য পানির ব্যবস্থা।
সিলেটের কাজির বাজার থেকে টুকের বাজারে আসা বৃষ্টি ভিজে কাঁপতে থাকা কয়েকজন মাদরাসা ছাত্র (বয়স আনুমানিক ১০-১১) জানালেন, মাদরাসায় পানি উঠে গেছে, হুজুররা সবাই চলে গেছেন। আমরা ৮-১০ জন বেরিয়ে পড়েছি, যেকোনোভাবে বাড়িতে পৌঁছাতে হবে। কীভাবে বাড়ি পৌঁছাবেন জানতে চাইলে অশ্রুসজল চোখে তারা বললেন, জানি না। কিন্তু বাড়ি পৌঁছাতে হবে।
উদ্ধার কাজে আসা একজন সেনা সদস্য জানালেন, যারা এখনও আটকে আছেন লোকাল গাইডদের সহযোগিতায় আমরা তাদেরকে উদ্ধার করে আনবো। এরপর আমরা দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদরে যাবো। আমাদের আরেকটা টিম কিছুক্ষণ পরেই দিরাইতে যাবে।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, আমি বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছি। সেনাবাহিনীর ভাইদেরকে জানিয়েছি, তারাও চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখানে এতো পানি যে আমরা দিক ঠিক করতে পারছি না। জানি না আমার পরিবার কী অবস্থায় আছে।
সেনাবাহিনীর ৮টি ব্যাটেলিয়ন বন্যা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে।
/এসএইচ