সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি চালুর উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলছেন আর্থিক খাত সংশ্লিষ্টরা। এতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ডিজিটাল কারেন্সি ব্যবস্থাপনার সম্পৃক্ত হতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। তবে প্রযুক্তিবিদরা মনে করেন, সঠিক ঝুঁকি নিরূপণ করতে না পারলে ডিজিটাল মুদ্রার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে সাইবার নিরাপত্তা।
প্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে বিশ্বব্যাপী আর্থিক লেনদেনেও পরিবর্তন আসছে। চালু হচ্ছে ভার্চুয়াল মুদ্রাও। ডিজিটাল কারেন্সির পথে হাঁটছে উন্নত দেশগুলো; যা সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি বা সিবিডিসি নামে পরিচিত। বাংলাদেশও এখন সম্পৃক্ত হতে চায় প্রযুক্তি নির্ভর এই নতুন মুদ্রাব্যবস্থায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ডিজিটাল মুদ্রা চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস্ উল ইসলাম বলেন, আমরা এখন টাকা নিয়ে চিন্তা করছি, ডলার নিয়ে চিন্তা করছি। কয়দিন পরে হয়তো ডলার-টাকা আর দেখাই যাবে না। টাকা-কারেন্সিই থাকবে না। তখন কীভাবে হবে? এখন তাই এ নিয়ে রিসার্চ করা দরকার। আমাদের স্টাডি সেল হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চয়ই বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যাবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে আমাদেরও খাপ খাইয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
ডিজিটাল মুদ্রার জন্য ইকো সিস্টেম প্রয়োজন। অর্থাৎ, কাগুজে নোটের মতোই এই ডিজিটাল মুদ্রা দিয়ে পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয়ের সুযোগ থাকতে হবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়েই আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ডিজিটাল কারেন্সি চালু না হলেও আমরা কিন্তু ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমে অনেকটাই উন্নতি করেছি। এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে একদম শেষ ধাপে গিয়ে আমরা ক্যাশ টাকা ব্যবহার করছি। সুতরাং, আমাদের অভিজ্ঞতা কিন্তু বেশ ভালো।
এখন মুদ্রা আছে তিন ধরনের- কাগজের মুদ্রা, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা ই-মানি এবং, ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েনের মতো ভার্চুয়াল মুদ্রা। ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহারের জন্য মানুষ যুক্ত হবে ইন্টারনেট ও পাবলিক নেটওয়ার্কিং সিস্টেমে। তাই ডিজিটাল মুদ্রার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে সাইবার নিরাপত্তা। এই ঝুঁকি সঠিকভাবে নিরূপণ করার কথা বলছেন প্রযুক্তিবিদরা।
বেসিস’র সহ সভাপতি ফাহিম আহমেদ বলেন, এটার সাথে কিছু নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে। সেই সাথে, স্থিতিশীলতার ব্যাপারেও কিছু ঝুঁকি আছে। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি, ডিজিটাল কারেন্সির মান অনেকটাই পরিবর্তনশীল। তাই নিরাপত্তার সাথে সাইবার ঝুঁকির দিকগুলো প্রশমিত করা- এই দুটো ব্যাপারে আমাদের কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, সুইডেন, ঘানা ও জ্যামাইকাসহ বেশ কিছু দেশ ডিজিটাল কারেন্সির পাইলট প্রজেক্ট শেষ করে এখন চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
/এম ই