ছাত্রদল সভাপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ শিবির ও বাগছাসের

0
2


‘শিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করছে’- ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)।

শুক্রবার (২৭ জুন) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা এর প্রতিবাদ জানান। এছাড়া এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ফেসবুকে ক্ষোভ জানান অনেকেই।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘বাংলা কলেজ ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান সাকিব ছাত্রলীগের একজন কর্মীকে ছাড়াতে পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে আমরা কী বুঝতে পারি? তারাই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে।’

ছাত্রদল সভাপতি আরও বলেন, ‘বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারির ছাত্রলীগ করার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি সরাসরি ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলেন। বর্তমানে ছাত্রশিবির ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করতে চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে এমন করা হলে আমরা মেনে নেবো না। ছাত্রশিবিরের বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনি সম্ভবত ২০০৮-০৯ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার কীভাবে ছাত্রত্ব থাকে?’

এ বক্তব্যের পর জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম ফেসবুকে লেখেন, ‘একটা বৃহৎ, ত্যাগী ও আদর্শভিত্তিক ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্ব থেকে ছাত্রসমাজ দায়িত্বশীল বক্তব্য প্রত্যাশা করে। কিন্তু যখন অযোগ্য কাউকে ধরে এনে নেতৃত্বে বসানো হয়, তখন তার কাছ থেকে দায়িত্বশীলতা আশা করাটাই বোকামি। আজ আপনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তা প্রমাণ করেছেন।’

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) জবি শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘জবি ছাত্রদলের কমিটিতে কতজন এক্স-ছাত্রলীগ আছে তা আমরা সবাই জানি। ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের সহযোদ্ধা রাকিব ভাইয়ের সইয়েই এই কমিটি। তাহলে তিনিই তো সবচেয়ে বেশি ছাত্রলীগ পুনর্বাসন করেছেন।’

তিনি আরও লেখেন, ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ গঠিত হয়েছে জুলাইয়ের গুলিবিদ্ধদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে। আমরা আহতদের পুনর্বাসন করেছি, এক্স-ছাত্রলীগদের নয়। কিন্তু রাকিব ভাই সেটা করেননি।’

ছাত্রদল সভাপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ শিবির ও বাগছাসের

ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘যে যত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকবে, তার কথাবার্তা ততটা ভেবে-চিন্তে বলা দরকার।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখপাত্র ফেরদৌস শেখ ফেসবুকে লেখেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন ঘটেছে মূলত ছাত্রদল সভাপতি রাকিব ভাইয়ের হাত ধরেই। তার সইকৃত কমিটিতেই দেখা যায়, জবির ছাত্র নয় এমন শিক্ষার্থীদেরও স্থান দেওয়া হয়েছে।’

ফেসবুকে ছাত্র নেতাদের এমন মন্তব্যে জবি ছাত্র রাজনীতিতে ফাঁটল ধরার আশঙ্কা করছেন অনেকে। সবাইকে ঐক্য ও সহনশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসাইন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলো বিগত দশ মাসে নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান গড়ে তুলেছে। জবি রোল মডেল হোক— এটি অনেকেই চায় না। অতীতেও জবিকে কলোনি করে রাখার মানসিকতা লক্ষ্য করা গেছে। তবে এখন সারাদেশের মানুষ জবিকে মর্যাদার চোখে দেখে। আশা করি জবির ঐক্য, সহনশীলতা ও পারস্পরিক সম্মানবোধ বিনষ্ট হবে না।’

টিএইচকিউ/কেএসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।