পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে কয়লা বোঝাই একটি ট্রাকসহ বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ায় দুই উপজেলার কয়েক এলাকার মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। দ্রুতই মেরামত না হলে তীব্র জনদুর্ভোগের আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিনগত রাত রাত ৪টার দিকে উপজেলার চন্ডিপুরে মালবাড়ী এলাকায় প্রায় ২৭ টন কয়লা নিয়ে একটি ট্রাক ব্রিজটি পার হচ্ছিলো। অতিরিক্ত ওজন সইতে না পেরে হঠাৎ ভেঙে পড়ে ব্রিজটি। এতে ট্রাকটি খালের পানিতে তলিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই ট্রাকচালক ও হেলপার পালিয়ে যায়।
জানা যায়, সড়কটি ইন্দুরকানি ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার কলারন, সন্ন্যাসী, মোরেলগঞ্জ, মোংলা, শরণখোলা রুটকে সংযুক্ত করেছে। ফলে একাধিক এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে এই রুটে বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় স্থানীয়দের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। অতি দ্রুত ব্রিজ মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে তোলার দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বহুদিন ধরে ব্রিজটির অবস্থা নাজুক ছিল। সেতুর গায়ে সতর্কতামূলকভাবে পাঁচ টনের বেশি যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সাইনবোর্ড থাকলেও ব্রিজের অপর পাশে আরোয়ান নামে একটি ইটের ভাটা তা উপেক্ষা করে ভারি ট্রাকে করে কয়লা আনা নেওয়া করতো। স্থানীয়রা বারবার অভিযোগ করার পরেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
চন্ডিপুরে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে আসা সোহাগ শেখ বলেন, আমি কাল বেড়াতে এসেছি। ওই বাড়িতে আমার গাড়ি রয়ে গেছে। ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় গাড়ি আনতে পারছি না। শুনেছি কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক ব্রিজে উঠলে ভেঙে খালে পড়ে যায়। বর্তমানে এখানের যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই কর্তৃপক্ষ অতি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করুক।
স্থানীয় চৌকিদার আব্দুল হালিম বলেন, ২৫ টনের একটি কয়লা বোঝাই ট্রাক ব্রিজে উঠলে ব্রিজ ভেঙে পড়ে যায় শুনে সঙ্গে সঙ্গে চলে এসেছি। রাত ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এখন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সন্ন্যাসী ফেরিঘাটের দিকে মানুষজন যেতে পারছে না। পথ বন্ধ হয়ে গাড়ি চলতে পারছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মিরাজ মোল্লা বলেন, আমরা চাই ব্রিজটি যাতে অতিদ্রুত সংস্কার করা হয়। সরকারি পদক্ষেপ নিতে অনেক দেরি হয় বিভিন্ন প্রসেসিং থাকে এ কারণে অনেক সময় লাগে, কিন্তু আমরা স্থানীয় বাসিন্দারা চাই সময়কে উপেক্ষা করে যাতে অতি দ্রুত এখানে যাতায়াতের জন্য একটি সুব্যবস্থা করা হয় তাহলে এই এলাকার ৩০ হাজার মানুষ মুক্তি পাবে ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচল করতে পারবে।
পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ জানান, ব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে লোক পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি এরই মধ্যে ফেরি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে একটি ক্রেন এনে ব্রিজ মেরামত করা হবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে দ্রুত বিকল্প সেতু নির্মাণ কিংবা অস্থায়ী চলাচলের কোনো ব্যবস্থা না হলে আরও বড় ধরনের জনদুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
মো. তরিকুল ইসলাম/এমএন/এএসএম