শ্বশুরবাড়িতে মিষ্টির প্যাকেটে বালু-মাটি পাঠালেন জামাই!

0
0


মা‌য়ের কোলজু‌ড়ে ফুটফু‌টে কন্যাসন্তান। নবজাত‌কের আগম‌নে খু‌শি প‌রিবারের লোকজন। ত‌বে খু‌শি হ‌তে পা‌রেন‌নি শিশু‌টির বাবা। কন্যাসন্তান হওয়ায় বিষয়‌টি ভা‌লোভা‌বে নি‌তে পা‌রেন‌নি তি‌নি। ফ‌লে রা‌গে-ক্ষো‌ভে নিজ সন্তান‌কে দে‌খতে এসে অদ্ভূত এক ঘটনা ঘ‌টি‌য়ে‌ছেন এই বাবা।

সন্তান‌কে দেখতে এসে মি‌ষ্টির প‌রিবর্তে প‌্যা‌কে‌টে ক‌রে নি‌য়ে এসে‌ছেন বালু-মা‌টি। সন্তা‌নের প্রতি একজন বাবার এমন অমান‌বিক আচর‌ণে ক্ষুব্ধ হ‌য়ে‌ছেন শ্বশু‌রবা‌ড়ির লোকজন। ক্ষোভ প্রকাশ ক‌রে‌ছেন স্থানীয় বা‌সিন্দারা।

ঘটনা‌টি ঘ‌টে‌ছে কু‌ড়িগ্রা‌মের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের বড় ধনতোলা গ্রা‌মে।

ত‌বে এসব অ‌ভি‌যোগ অ‌স্বীকার ক‌রে‌ছেন অ‌ভিযুক্ত মোক‌ছেদুল ইসলাম। তা‌কে ফাসা‌নোর প‌রিকল্পনা করা হ‌চ্ছে ব‌লে দা‌বি তার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক বছর আগে উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের বড় ধনতোলা এলাকার সাহেব আলীর ছেলে মোকছেদুল ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের কাজাইকাটা এলাকার আফতাব আলীর মেয়ে আছমা খাতুনের বিয়ে হয়। এক সপ্তাহ আগে বাবার বা‌ড়ি‌তে দাওয়াত খে‌তে যান ওই গৃহবধূ। সেখা‌নে বুধবার (১১ জুন) সকা‌লে এক‌টি কন্যাসন্তান ভূ‌মিষ্ট হয় তার। খবর পে‌য়ে ওইদিন মোকছেদুল ইসলাম তার সন্তান‌কে দেখার জন্য যান।

তবে শ্বশুরবা‌ড়ির লোকজ‌নের অ‌ভি‌যোগ, কন্যাসন্তান হওয়ায় খু‌শি হ‌তে পা‌রেন‌নি মোক‌ছেদুল। তার আশা ছিল ছে‌লেসন্তান হ‌বে। কিন্তু কন্যাসন্তান হওয়ায় মি‌ষ্টির পরিব‌র্তে মি‌ষ্টির প‌্যা‌কে‌টে বা‌লু-মা‌টি নি‌য়ে এসে‌ছেন।

স্থানীয় প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়ি এসে কার্টন খুলে দেখে মাটি ও বালু। মেয়ে হয়েছে বলে এভাবে অপমান করবে এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।

গৃহবধূর বাবা আফতাব আলী ব‌লেন, ‘আমার মেয়েকে আগে থেকেই নির্যাতন করতো মোকছেদুল। ত‌বে প্যাকেটে মিষ্টির পরিবর্তে বালু-মাটি আনায় খুব কষ্ট পেয়েছি।’

গৃহবধূ আছমা বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী আমাকে নির্যাতন করতো। আমার গর্ভে সন্তান এসেছে, এ খবর জানার পর আরও বেশি নির্যাতন করতো। বলতো, ছেলে হলে সুখ পাবে, আর মেয়ে হলে দুঃখ পাবে। পরে আমার মেয়েসন্তান জন্ম হয়। এ সংবাদ পেয়ে আমার স্বামী আমাদের বাড়িতে মিষ্টির প‌্যা‌কেট নিয়ে আসে। বাড়ির লোকজন প‌্যা‌কেট খু‌লে দে‌খে বালুভ‌র্তি। ওই প‌্যা‌কে‌টে মি‌ষ্টি ছিল না।’

এসব অ‌ভি‌যোগ অস্বীকার ক‌রে মোকছেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কন্যাসন্তান জন্ম হওয়ার কথা শুনে আনন্দে শ্বশুরবাড়িতে এককেজি মিষ্টি ও মেয়ের পোশাক নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিষ্টির প‌্যা‌কে‌টে নাকি বা‌লু দেখছে। এগুলো সব সাজানো। আমা‌কে ফাসা‌নোর প‌রিকল্পনা কর‌ছে তারা।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অনেকেই আমাকে ফোন দিয়েছেন। আমি খোঁজ নিয়েছি। ঘটনাটি সত্যি হলে খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

রোকনুজ্জামান মানু/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।