৪৫ মিনিটের বৃষ্টিতে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। যদিও সিটি করপোরেশন বলছে, দ্রুত পানি নেমে যাবে।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল পৌনে ১০টা থেকে ময়মনসিংহে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। চলে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। এ বৃষ্টি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
স্থানীয়রা জানান, ভারি বর্ষণে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সি কে ঘোষ রোডের ছায়াবানী সিনেমা হলের সামনে থেকে ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ, সিটি করপোরেশনের বাশবাড়ি কলোনি, কাচিঝুলি গোলাপজান রোড, আনন্দ মোহন কলেজ রোড ও মীরবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পৌনে একঘণ্টার বৃষ্টি বিভিন্ন এলাকার মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। যেকোনো সময় আবারও বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। বিরতিহীনভাবে কয়েকদিন বৃষ্টি হলে নগরবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
নগরীর ধোপাখলা এলাকার বাসিন্দা শাকিল আহমেদ বলেন, বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর রিকশা দিয়ে শহরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় যাচ্ছিলাম। ছায়াবানী সিনেমা হলের সামনে থেকে ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। পাশাপাশি যাত্রীসহ পথচারীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, পানি সরতে সময় লাগবে।
বাশবাড়ি কলোনি এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, কিছুক্ষণের বৃষ্টিতেই এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অনেকের ঘরে পানি ঢুকেছে। রান্না করার মতো পরিস্থিতিও নেই। টানা দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টি হলে ভোগান্তি মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে। ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে থাকি। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে কেন?
গোলাপজান রোড এলাকার বাসিন্দা জাহিদ হোসেন বলেন, ড্রেন দিয়ে ঠিকমতো পানি যেতে পারছে না। ড্রেনের ভেতরে প্রচুর ময়লা-আবর্জনা থাকতে পারে। পুরো ড্রেন পরিষ্কারের উদ্যোগ নিলে বর্ষায় ভোগান্তি কমবে।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুমনা আল মাজীদ বলেন, নগরীর বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও পানি ধীরে ধীরে নামছে। দ্রুত পানি নেমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নগরবাসীকেও সচেতন থাকতে হবে। ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। এতে ড্রেন ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
এর আগে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল ড্রেন-খালের অবস্থা বেহাল, ময়মনসিংহবাসীকে ভোগাবে ‘বর্ষা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে জাগো নিউজ। এতে বর্ষা মৌসুমে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার আশংকা তুলে ধরা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, বর্ষা মৌসুমে নগরবাসী ভোগান্তিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, খালগুলো এখনো খননসহ পরিষ্কার করার কাজের কোনো ফলাফল নেই। অনেক এলাকায় ড্রেন নির্মাণ বন্ধ। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে অনেক ঠিকাদার ড্রেন ও সড়ক নির্মাণ কাজ অর্ধেক রেখে গা-ঢাকা দিয়েছেন। ফলে কিছু এলাকায় ঢিলেঢালাভাবে কাজ চললেও বেশিরভাগ কাজ বন্ধ রয়েছে।
আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ড্রেনের নোংরা পানি খুঁড়ে রাখা সড়কে উঠবে। পাশাপাশি খুঁড়ে রাখা সড়কে জমবে পানি। সবমিলিয়ে নগরীতে জলাবদ্ধতার শঙ্কা রয়েছে। একইসঙ্গে বিগত কয়েকবছরে জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর বিভিন্ন খাল খাননে কোটি কোটি কোটি টাকা ব্যায়ের চিত্রও তুলে ধরা হয়।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এএইচ/জেআইএম