ভোমরা স্থলবন্দরে যে প্রভাব ফেলবে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

0
0


ভারত সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞায় সীমান্ত বাণিজ্যে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। বাংলাদেশ থেকে কিছু পণ্য প্রবেশে ভারত সীমিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে রপ্তানি কার্যক্রমে সাময়িক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) গত শনিবার (১৭ মে) এক নির্দেশনায় জানায়, বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসহ কয়েকটি পণ্য ভারতের নির্দিষ্ট কিছু স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে এসব পণ্যের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

তবে এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভোমরা বন্দর সরাসরি কতটা প্রভাবিত হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভোমরা বন্দরের রপ্তানিকারক মোহসিন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা এলে আগে থেকেই যেন আমরা অবগত হই। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করে।’

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই বন্দর দিয়ে খুবই সীমিত পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত শিশুখাদ্য রপ্তানি হয়। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা পণ্য কাপড় ভোমরা দিয়ে খুব কম পরিমাণে রপ্তানি হয়। ফলে রপ্তানিতে সামান্য প্রভাব পড়লেও বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া দেশের অন্য বন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাবার রপ্তানি বন্ধ হলে ভোমরা বন্দর দিয়ে এসব সামগ্রী ভারতে রপ্তানি হলে বন্দরের রপ্তানি আয় বাড়তেও পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের কাস্টমস বা ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কাছ থেকেও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বার্তা আসেনি।’

ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রাসেল আহম্মেদ জাগো নিউজকে জানান, রোববার (১৮ মে) ভোমরা বন্দর দিয়ে ২৮টি পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ট্রাভেল ব্যাগ ১২ ট্রাক, জুট ইয়ান ১২ ট্রাক, ইয়ান ওয়েস্ট ৩ ট্রাক, রি-প্রসেস প্লাস্টিক ২ ট্রাক ও কটন নিকেট ফেব্রিক্স ৩ ট্রাক।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা পণ্যের মধ্যে থাকা কাপড় এই বন্দর দিয়ে খুব কম পরিমাণ রপ্তানি হয়। এজন্য ভোমরা বন্দরের রাজস্ব আয়ে সমস্যা হবে না।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা যদি দীর্ঘমেয়াদি হয় এবং অন্যান্য পণ্যে বিস্তৃত হয়, তাহলে ভবিষ্যতে সীমান্ত বাণিজ্যে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশে স্থলবন্দরগুলোর মধ্যে ভোমরা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। এরকম পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী মহল সতর্কতা ও বিকল্প প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছে।

আহসানুর রহমান রাজীব/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।