প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে দুই অনলাইন শাড়ি ব্যবসায়ী প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ৩১টি জামদানি শাড়ি হারান। এ ঘটনায় প্রতারক ও চোর চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দক্ষিণখান থানা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বুধবার (১৪ মে) রাত ২টা ৫ মিনিটের দিকে দক্ষিণখান থানার কসাইবাড়ী হাজী মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- মেহেদী হাসান শাওন (২৪), মো. আশরাফুল (২১), সাব্বির হোসেন রিমন (২৫) ও মো. সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ (২৫)। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে চুরি হওয়া ১১টি জামদানি শাড়ি উদ্ধার করা হয়।
দক্ষিণখান থানার বরাত দিয়ে তালেবুর রহমান বলেন, গত (১২ মে) দক্ষিণখান থানার মোল্লারটেক কসাইবাড়ী এলাকায় প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েন দুই ব্যবসায়ী, নুর মোহাম্মাদ রাব্বি (২৪) ও তার বড় ভাই ছহিম (৩৫)। তারা জামদানি শাড়ি বিক্রির জন্য ওই এলাকায় যান এবং সেখানে প্রতারকদের হাতে নিগৃহীত হন। এ ঘটনায় (১৪ মে) দক্ষিণখান থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মাদ রাব্বি।
তিনি বলেন, বাদী নুর মোহাম্মাদ রাব্বি নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানা এলাকা থেকে তার ফেসবুক পেজ ‘‘Jamdani Gram–জামদানি গ্রাম’’ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ডার নিয়ে জামদানি শাড়ি বিক্রি করতেন। অজ্ঞাতনামা এক নারী ক্রেতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথাবার্তার একপর্যায়ে ক্রেতা তার বোনের বিয়ে উপলক্ষে ৭ থেকে ৮টি জামদানি শাড়ি কাপড় কিনবে বলে জানায়। নারী ক্রেতা শাড়ি যাচাই করার জন্য ২০/২৫টি জামদানি শাড়ি দক্ষিণখান থানার মোল্লারটেক বটতলায় নিয়ে আসার জন্য বলে। তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে বাদী সরল বিশ্বাসে তার বড় ভাই ছহিমকে সঙ্গে নিয়ে গত (১২ মে) সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ৩১টি জামদানি শাড়ি নিয়ে সিএনজিতে সেই স্থানে যায়। তখন সেই অজ্ঞাতনামা নারী ক্রেতাকে ফোন করলে সে বাদীকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার জন্য বলে। তার কথামতো বাদী ও তার ভাই ওই স্থানে অপেক্ষা করতে থাকে। প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর অজ্ঞাতনামা চারজন লোক ক্রেতা মুনের পরিচয় দিয়ে বাদীকে একটি অন্ধকার গলির ভেতরের দিকে যেতে বলে। বাদীর সন্দেহ হলে তিনি দ্রুত জামদানি শাড়ি নিয়ে সিএনজিসহ সেই স্থান হতে রওনা করেন। পথিমধ্যে কাসাইবাড়ী বাজারের দিকে যাওয়ার সময় অজ্ঞাতনামা সেই ক্রেতা বাদীকে ফোন করে তার নিকট থেকে জামদানি শাড়ি ক্রয় করবে বলে আশ্বস্ত করে এবং কসাইবাড়ী এলাকার কানাডা প্লাজার সামনে থাকার জন্য বলে। বাদী রাত আনুমানিক ৮টা ১০ মিনিটের দিকে সেখানে পৌঁছানোর পর হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দুষ্কৃতকারী দল তাদের ওপর আক্রমণ করে। তারা এলোপাতাড়ি কিল, ঘুসি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে ১৯টি জামদানি শাড়ির একটি গাঁইট ছিনিয়ে নেয়, যার মূল্য প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা।
থানা পুলিশের বরাতে তালেবুর রহমান আরও বলেন, এ ঘটনায় মামলা অভিযুক্তদের মধ্য থেকে চারজনকে শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর (১৪ মে) রাত আনুমানিক ২টা ৫ মিনিটের দিকে দক্ষিণখান থানার কসাইবাড়ী হাজী মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্তরা পেশাদার চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কেআর/এমআরএম