দেশের পোল্ট্রি খাত নিয়ে নানাভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিবিষয়ক শিল্পপ্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান। তিনি এসময় বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। এ সংগঠন প্রান্তিক খামারিদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার ও ভুল তথ্য দিয়ে দেশের পোল্ট্রি খাতকে অস্থিতিশীল করছে বলেও মন্তব্য করেছেন এ উদ্যোক্তা।
সোমবার (৫ মে) বণিক বার্তা আয়োজিত রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও প্রাণ-প্রকৃতি সম্মেলন-২০২৫’ এর তৃতীয় অধিবেশনে এসব কথা বলেন তিনি। ওই অধিবেশনটির শিরোনাম ছিল ‘খাদ্যের বাজার, সরবরাহ ও দেশজ সক্ষমতা’।
সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এ অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান। এছাড়া তৃতীয় অধিবেশনে প্যানেল আলোচক হিসেবে আলোচনায় আরও অংশ নেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল, কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহতেশাম বি শাহজাহান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের (স্বপ্ন) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, কিছুদিন আগে আমাদের কাজী ফার্মসসহ ছয়টি কোম্পানিকে বড় জরিমানা করেছিল বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। ওই সময় বলা হয়েছিল, সব প্রতিষ্ঠান মিলে যোগসাজশ করে বাজারে ডিম-মুরগির দাম বাড়িয়েছে। অর্থাৎ সবাই একসঙ্গে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এটা বাজারের বৈশিষ্ট্য ছিল, যখন দাম বাড়ে তখন সবাই একসঙ্গে বাড়ান, কমলে সবাই কমান। এরমধ্যে কোনো যোগসাজশ ছিল না।
এরপর আমাদের নামে সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়। ওই জরিমানার সময়ও একজন ব্যক্তি, যার নাম সুমন হাওলাদার, তিনি প্রতিযোগিতা কমিশনে বলেছেন যে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে। তার এ কথাকে প্রতিযোগিতা কমিশন গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। যার উপর ভিত্তি করে ওইসব কোম্পানিকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এই সুমন হাওলাদার একজন ভুয়া সভাপতি। কারণ তার যে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন, এ নামে কোন নিবন্ধিত সংগঠন নেই। আগেও ছিল না, এখনো নেই। কিন্তু এই লোকের কথায় নানা অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে এ খাতে। নানা ভুয়া তথ্য দিচ্ছেন, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার গ্রহণ করছে।
কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, ভুল বুঝিয়ে যে ছয়টা কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে এরমধ্যে ভারতের সবচেয়ে বড় কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেগুনা ছিল ও সিপি ছিল। যারা ২১টি দেশে ব্যবসা পরিচালনা করছে। তাদের বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে। এই কোম্পানি নিশ্চয় সামান্য কয়েকটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করতে বাংলাদেশে আসেনি।
তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করা হচ্ছে। সৎ ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হচ্ছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিমুখ করা হচ্ছে। এটি একটি চক্রান্ত। সরকারকে এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান করেন এ ব্যবসায়ী।
এনএইচ/এমএইচআর