দুই বছরে ৪ সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা

0
0


রমজানের শেষ সময় চলছে। চারদিকে ঈদের আবহ। ঈদের প্রস্তুতি চলছিল পিরোজপুরের নাসির খাঁন ও শিউলি বেগমের পরিবারেও। এরমাঝেই হঠাৎ সব শেষ হয়ে যায়। ঈদের উচ্ছ্বাস রূপ নেয় বিষাদের সাগরে। সড়ক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে প্রাণ হারায় এ দম্পতির তিন সন্তান। একসঙ্গে তিন সন্তানের মরদেহ বইতে পারছেন না বাবা নাসির খান। পাহাড়সম এ কষ্ট সইতে পারছেন না মা শিউলি বেগমও। সন্তানদের হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে পড়েছেন তারা।

শনিবার (২৯ মার্চ) বন্ধুর জন্য আনা ঈদের পোশাক দিতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে প্রাণ হারায় তিন ভাই মো. নাঈমুজ্জামান শুভ (২২), মো. শান্ত (১৪) ও মো. নাদিম (৮)। তাদের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাইশকুরা ইউনিয়নের টিকিকাটা গ্রামে। তিন ভাই মিলে মোটরসাইকেলে পার্শ্ববর্তী বরগুনা জেলার পাথরঘাটায় যাচ্ছিলেন বড় ভাইয়ের বন্ধুর জন্য কেনা ঈদের নতুন পোশাক পৌঁছে দিতে। সেই নতুন পোশাক পৌঁছে দিয়ে তাদের আর বাড়ি ফেরা হয়নি।

পথে রাজিব পরিবহনের বাসের চাপায় প্রাণ হারান তারা। ‎শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের সোনারবাংলা এলাকার পাথরঘাটা-মঠবাড়িয়া সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।



‎দুপুরে নিহত তিন ভাইয়ের মরদেহ উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের নানা বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাদের মরদেহ দেখে বাবা-মাসহ আশপাশের মানুষের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। শেষবারের মতো একনজর দেখতে আশপাশের অসংখ্য মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করেন।

‎নিহত তিন ভাইয়ের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তার মা শিউলি বেগম। ঈদের আগ মুহূর্তে তিন সন্তানকে হারিয়ে বারবার কেঁদে উঠছেন তিনি। শিউলি বেগমের চার সন্তানের মধ্যে একজন দুই বছর আগে পানিতে ডুবে মারা যায়। বাকি তিন ছেলেও তাকে ছেড়ে পরপারে পারি জমালো সড়ক দুর্ঘটনায়।

‎কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা শিউলি বেগম বলেন, আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। হায় আমার সন্তান কোথায় পাবো? বন্ধুর জন্য কেনা ঈদের জামা পৌঁছে দিতে গেল আর ফিরে আসলো না। এখন আসছে সবাই লাশ হয়ে।

দুই বছরে ৪ সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা

‎মামা বুলু হাওলাদার বলেন, ওরা সবাই ঢাকায় থাকে। বড় জন গার্মেন্টসে চাকরি করে। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। বাড়িতে এসে বড় ভাগনে নাঈমুজ্জামান শুভ তার বন্ধুর পরিবারের জন্য ঢাকা থেকে আনা ঈদের পোশাক পৌঁছে দিতে গিয়েছিল। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনই মারা গিয়ে পরিবারটা পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেলো।

‎গুলিশাখালী গ্রামের বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, একই পরিবারের তিন সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে মহল্লায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক।

এমএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।