চিকিৎসক সংকটে সেবা দিতে পারছে না খুলনা বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। বিভিন্ন পদে নতুন জনবল নিয়োগ হলেও চিকিৎসকের অভাবে মাদকাসক্ত রোগী ভর্তি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে মাদকবিরোধী প্রচারণাতেই দিন পার করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অভিযোগ রয়েছে, বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের ব্যবসা বাঁচাতে চিকিৎসক নিয়োগে কৃত্রিম জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। তবে দ্রুতই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গল্লামারী এলাকায় অবস্থিত ২৫ শয্যা বিশিষ্ট এ প্রতিষ্ঠানটি খুলনা বিভাগের একমাত্র সরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় রোগী ভর্তি ও সেবা দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। ভর্তি হয়ে চিকিৎসার সুযোগ থাকলেও বর্তমানে কোনো রোগী নেই। দাপ্তরিক কাজ চললেও বেডগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। নতুন একাধিক পদে জনবল নিয়োগ হলেও চিকিৎসক পদ ফাঁকা রয়েছে। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী প্রচারণায় দিন পার করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা জানান, নানা জটিলতা দেখিয়ে একটি চক্র চিকিৎসক নিয়োগে বাধা তৈরি করছে। বেসরকারি নিরমায় কেন্দ্রগুলোর ব্যবসা বন্ধ হওয়ার ভয়ে এ কৃত্রিম জটিলতা তৈরি করা হয়েছে। চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও তা কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা ব্যয়বহুল। ফলে সবাই সেখানে চিকিৎসা নিতে পারে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে দরিদ্ররা সহজেই উন্নত মানের সেবা পাবেন। কিন্তু অধিদপ্তরের এ নিয়ে তেমন ভাবনা নেই।
বেসরকারি মাদক নিরমায় কেন্দ্রে আসা এক অভিভাবক বলেন, পরিবারের এক সদস্যকে দুই মাস হলো ভর্তি করেছি। চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তবু নিরুপায় হয়ে বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের শরণাপন্ন হয়েছি।
খুলনা সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রের রিহেবিলিটেশন কর্মকর্তা রাসেল আহমেদ রনি বলেন, আমি চলতি মাসে যোগদান করেছি। চিকিৎসক না থাকায় রোগী ভর্তি করতে পারছি না। মাদকাসক্ত রোগীর বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। চিকিৎসক ছাড়া এ চিকিৎসা দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে চিকিৎসক খুবই প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি শিগগিরই নিয়োগ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দাপ্তরিক কার্যক্রম এবং বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
এফএ/এএসএম