পাঠ্যবই ছাপাতে পাল্টা পদক্ষেপ এনসিটিবির, বেঁধে দিলো সময়সীমা

0
0


বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণের জন্য প্রথম থেকে দশম শ্রেণির ৪০ কোটি ১৬ লাখের বেশি পাঠ্যবই ছাপাতে ছাপাখানা মালিকদের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি রাব্বানী জাব্বার এবং সাধারণ সম্পাদক কাউসারুজ্জামান রুবেলের উপস্থিতিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ কথা জানান এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান।

বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী- আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের সব বই এবং মাধ্যমিকের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই ছাপা শেষ করে স্কুলে পৌঁছাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তাছাড়া ২০২৫ সালের ১০ জানুয়ারির মধ্যে মাধ্যমিকের আরও পাঁচটি বই এবং ২০ জানুয়ারির মধ্যে বাকি সব বই পৌঁছানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর প্রেস মালিকদের একজন সদস্য যে আবেদন দিয়েছেন, এটা কোনোভাবেই বিধিসম্মত নয়। আমরা গোয়েন্দা সংস্থা এবং অন্যান্য অংশীদারদের সমন্বয়ে তদন্ত করেছি, পাঠ্যবই পৌঁছাতে চুক্তি হওয়া সময়ের বেশি লাগবে না। তারা এখন শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদনের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জুনায়েদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, আমি লিখিত আবেদনের জন্য ক্ষমা চাই। কয়েকজন প্রেস মালিকের দাবির প্রেক্ষিতে আমি এ ধরনের আবেদন জমা দিয়েছিলাম।

মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি মো. রাব্বানী জাব্বার বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদনের বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এ ধরনের ভুল বোঝাবুঝির জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। এ ধরনের কাজ আর কখনো হবে না। এনসিটিবির সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছাতে কাজ করছি।

মুদ্রণ সমিতির নেতার কাণ্ড!

জানা যায, বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির অফিসিয়াল প্যাডে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর একটি চিঠি লেখেন সমিতির ভাইস-চেয়ারম্যান জুনায়েদুল্লাহ আল মাহফুজ। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘২০২৫ সালের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত সময় প্রয়োজন। এর আগে পাঠ্যবই ছাপা শেষ করা সম্ভব নয়।’

একই সঙ্গে টেন্ডারের শর্তানুযায়ী—৫০ শতাংশ বই জানুয়ারিতে সরবরাহের শর্ত রহিত করা এবং পুস্তক মুদ্রণের আগে আংশিক বিল পরিশোধের দাবি জানান তিনি। রোববার (২২ ডিসেম্বর) এ চিঠি দেন মুদ্রণ শিল্প সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজ।

চিঠির বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তাদের ওপর চাপ আসতে থাকে। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে এনসিটিবি কর্মকর্তাদের পরামর্শে রাতে আবার শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর চিঠি লেখেন মুদ্রণ সমিতির এ নেতা। তাতে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোয়’ ও ‘জাতীয় স্বার্থবিরোধী কাজ’ করায় জাতির কাছে ক্ষমা চান তিনি।

মুদ্রণ শিল্প সমিতির অফিসিয়াল প্যাডে এমন আবেদন করার বিষয়টি জানতেন না বলে দাবি করেছেন সমিতির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক। তারাও এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চেয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছেন। মুদ্রণ সমিতির নেতাদের চিঠি দেওয়া ও পরক্ষণে ক্ষমা চাওয়ার এমন কাণ্ডে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এএএইচ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।