সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বিদ্রোহীরা। এর আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারি বাহিনীকে পিছু হঠিয়ে আলেপ্পো, হামাসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহীরা। এছাড়া সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় দারা ও সোয়েদা শহরের বেশিরভাগ এলাকা দখলে নেয় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে দারা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দামেস্ক থেকে তাদের দূরুত্ব দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল)। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেন, স্থানীয় বিদ্রোহী যোদ্ধারা এখন দারা প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমে বিদ্রোহী জোটের নেতৃত্ব দেওয়া কমান্ডার আবদেল ঘানি বলেন, রাজধানী দামেস্কের দক্ষিণ প্রবেশপথ থেকে আমরা ২০ কিলোমিটারের কম দূরত্বে রয়েছি। এর আগে শুক্রবার ইসরায়েলে সীমান্তের কাছে কুইনেত্রা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ওই এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথাও জানিয়েছে।
গত ২৭ নভেম্বর হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সরকারি বাহিনীর ওপর আকস্মিক হামলা শুরু করে। আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সংগঠন থেকে বের হয়ে এইচটিএস গঠিত হয়। এইচটিএসের নেতৃত্বে ঘটনার আকস্মিকতায় অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে সরকারি বাহিনী।
একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো দখল করে। এরপর গত বৃহস্পতিবার মধ্যাঞ্চলীয় হামা শহর থেকে পিছু হটে সরকারি বাহিনী। এর পর থেকে একে একে অন্য শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে আসাদের সরকারি বাহিনী। এর আগে যুদ্ধে বাশার আল-আসাদের বাহিনী এত অল্প সময়ের মধ্যে এত গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায়নি।
এইচটিএস নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বলেছেন, কর্তৃত্ববাদী প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করাই তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য।
এদিকে, সিরিয়া ইস্যুতে আলোচনার জন্য তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান শনিবার রুশ ও ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করতে ফিদান দোহায় যাচ্ছেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, এ নিয়ে এখনো নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দোহার বৈঠকে সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ।
সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি
এসএএইচ