ডিসেম্বরজুড়ে শিল্পকলা একাডেমির বর্ণিল আয়োজন

0
6


বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ডিসেম্বরজুড়ে সারাদেশে জেলা, বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নানান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। গতকাল ৪ ডিসেম্বর বুধবার বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব আয়োজন নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।

সারাদেশে একযোগে জাতীয় যন্ত্রসংগীত উৎসব ২০২৪, কাওয়ালি সন্ধ্যা, গণঅভ্যুত্থানের গান, বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান, নকশিককাঁথা তৈরি কর্মশালা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে আলোকচিত্র প্রশিক্ষণ, সাপ্তাহিক বাহাস সিরিজ, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন, মহান বিজয় দিবস পালন, ভ্রাম্যমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অংশগ্রহণমূলক অ্যাকশন রিসার্চ ও প্র্যাকটিস এজ রিসার্চের আলোকে জেলায় জেলায় শিল্পীদের জন্য গবেষণা বৃত্তি ঘোষণা ও প্রস্তাব আহবান, ৬৪ জেলায় জাতীয় নাট্যকর্মশালা, ভাওয়াইয়া গানের অনুষ্ঠান, প্রাচ্যনাট এর নাট্য প্রদর্শনী, লোকসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অপেরা এর নাট্যপ্রদর্শনী, নতুন ওয়েব জার্নাল প্রকাশসহ বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ সংস্কৃতি সংবাদ প্রচারে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‌‘শিল্পকলা একাডেমি নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশি কিছু মিডিয়া আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে। এখানে গণমাধ্যমের একটা বড় ভূমিকা আছে। আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়ান। আামদের কাজগুলো যেন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে পারি।’

মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের কনজারভেটরি সেল করার পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকার বাইরে একটা বড় জায়গায় হাউজিং ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে নিয়মিত সংস্কৃতি চর্চা হবে। দলগুলো সেখানে থাকবে, চর্চা করবে। নতুন প্রজন্মকে প্রশিক্ষিত করবে। দেশের বিভিন্ন জেলায় পারফরম্যান্সের করজেভেটরী যদি আমরা তৈরি করতে পারি তাহলে এগুলোতে সবাই প্রশিক্ষিত হবে। এটা নিয়ে আমাদের বড় পরিকল্পনা রয়েছে।’

‘বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে নাচ গান করা বন্ধ করেছি। আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি, এখানে যে অনুষ্ঠানগুলো হবে সেখানে আপনারা আমন্ত্রিত। জনগনের জন্য এই জায়গা কাজেই এগুলোতে বড় রকমের পরিবর্তন আছে।’

আদিবাসীদের নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলা বন্ধ করে আদিবাসী বলতে চাই, তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমাদের সেই ছোট ছোট আদিবাসী দল যারা নিজেরা কোন উৎসব করতে পারেনা তাদের পাশে দাঁড়িতে তাদের উৎসবের ভাগিদার হতে চাই। আমরা এটাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা বলে মনে করি এবং এভাবেই আমরা ডিসেম্বর মাস, বিজয়ের মাসটাকে উদযাপন করতে চাই।’

গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গবেষণাকে আমরা পারফরমেন্স এবং রিসার্চের জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। গবেষণা মানে এখন আমাদের কাছে ঘরের কোণে বসে অন্ধকারে দশটি বই নিয়ে কিছু লিখা নয়। গবেষণা মানে পারফরমেন্স, নতুন একটা কিছু আবিস্কার করা। এই রিসার্স এন্ড পারফরমেন্স কিন্তু ইউরোপ ও আমেরিকাতে চালু আছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও চালু হয়েছে এ মাস থেকে। আমরাও চালু করতে যাচ্ছি। অংশগ্রহণকারীদের রিসার্চ আছে এখানে। গবেষক গিয়ে নির্দ্দিষ্ট একটি জায়গায় গবেষণা করবেন না। যারা ওইখানে থাকেন তাদের এবং সহকর্মীদের সাথে যুক্ত হয়ে গবেষণাগুলো পরিচালিত হবে। এ ধরণের বিভিন্ন কার্যক্রম যুক্ত হতে যাচ্ছে।’

পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মহাপরিচালক এবং বিভাগের পরিচালকবৃন্দ।

সেখানে জানানো হয়, আজ ৫ ডিসেম্বর সিলেটে অনুষ্ঠিত হবে ‘কাওয়ালি সন্ধ্যা’। একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় চাঁদনীঘাট, ক্বীন ব্রিজ চত্ত্বরে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। উদ্বোধন করবেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সাংবাদিক আবু তাহের মোহাম্মদ তুরাবের বড় ভাই আবুল আহসান মো. আযরফ।

কাওয়ালি সন্ধ্যার সাংস্কৃতিক পর্বে শুরুতে কাওয়ালি গান ‘ভারদো ঝোলি মেরি ইয়া মোহাম্মদ’, ‘দামাদম মাস্ত কালান্দার’ ও ‘দোজাহানের বাদশা নবী কামলী ওয়ালা’ পরিবেশন করবেন জালালাবাদী ব্রাদার্স, সিলেট, পরিচালনায় থাকবেন আরফান আজাদ শাওন (ভোকাল/মুলশিল্পী)। এরপর ‘কুল মাখলুক গাহে হযরত বালাগাল উলা বি’, ‘খাজা বাবা খাজা বাবা মারহাবা মারহাবা’ ও ‘দয়াল খাজা হিন্দে রাজা’ গানসমূহ পরিবেশন করবেন আশেকানে জালালিয়া শিল্পী গোষ্ঠী, সিলেট। পরিচালনায় সূর্যলাল দাস (ভোকাল/মুলশিল্পী)।

সবশেষে কাওয়ালি গান পরিবেশন করবেন ঢাকা থেকে আগত সমীর কাওয়ালি ও তার দল।

এলএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।