ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তেহরানের জাতিসংঘ দূতের সঙ্গে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের কোনো বৈঠক হয়নি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন।
আরাকচি বলেন, এই (বৈঠকের) খবরটি ছিল একটি আমেরিকান গণমাধ্যমের মিথ্যা প্রচারণা, যার পেছনের উদ্দেশ্যও অনুমান করা যেতে পারে।
এর আগে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এমন বৈঠকের খবর অস্বীকার করেছিল। গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ইলন মাস্ক গত সোমবার ইরানের জাতিসংঘ দূতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
আরও পড়ুন>>
আরাকচি এই প্রতিবেদনকে ‘পরীক্ষামূলক প্রচেষ্টা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, আমার মতে, আমেরিকান গণমাধ্যমের এই গল্পটি মূলত একটি পরীক্ষা, যাতে দেখা হচ্ছে এ ধরনের পদক্ষেপের সম্ভাবনা রয়েছে কি না।
আরাকচি আরও বলেন, আমরা এখনো নতুন মার্কিন প্রশাসনের নীতি স্পষ্ট হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। সেই নীতির ওপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের নিজস্ব নীতিও সমন্বয় করবো। তবে বর্তমান সময়ে এমন কোনো বৈঠক করা উপযুক্ত নয়।
তিনি উল্লেখ করেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির অনুমতি ছাড়াই এমন কোনো বৈঠক সম্ভব নয়। আরাকচি বলেন, এ ধরনের কোনো বৈঠকের জন্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে অনুমতি ছিল না।
ইরান ও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। ইরান সম্প্রতি আইএইএ-কে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বিশেষজ্ঞদের প্রবেশাধিকার দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং কিছু অঘোষিত স্থাপনায় ইউরেনিয়াম পাওয়ার ব্যাখ্যা দিতেও ব্যর্থ হয়েছে।
আরাকচি বলেন, আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি আগামী বছরে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং জটিল হতে চলেছে। আমরা সহযোগিতা কিংবা সংঘাত, উভয় ক্ষেত্রেই প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি, যা ২০১৮ সালে ট্রাম্পের প্রথম দফার শাসনামলে বাতিল করা হয়, এখন আর ইরানের কাছে তেমন গুরুত্ব বহন করে না। আরাকচির মতে, যদি আলোচনা শুরু হয়, তবে পুরোনো চুক্তিটি একটি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার হতে পারে, তবে এর আগের গুরুত্ব আর নেই। আমাদের একটি বাস্তবসম্মত চুক্তি প্রয়োজন।
সূত্র: রয়টার্স
কেএএ/