বাংলাদেশের কোনো পেসার ১৫০ বা তার বেশি গতিতে বল করবেন, এটা ছিল কল্পনাতীত। কিন্তু সেই অকল্পনীয় বিষয়কেই বাস্তব রূপ দিলেন নাহিদ রানা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম ৫ ম্যাচে সাদা জার্সি গায়ে গতির ঝড় তুলেছিলেন এই ডানহাতি। গতকাল সোমবার ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডেতেও নিজের ক্লাস দেখালেন রানা।
আফগানিস্তানের তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে প্রথমবার দলে ডাকা হয়েছিল রানাকে। অভিষেক ম্যাচেই আফগানদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বিধ্বংসী বোলিং করে রঙ্গিন জার্সিতে অভিষেক ম্যাচ জয়ে রাঙাতে চেয়েছিলেন রানা। তবে শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি।
শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্য ৫ উইকেট আর ১০ বল হাতে রেখে টপকে গেছে আফগানরা। এতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে হাসমতউল্লাহ শহিদির দল।
পাকিস্তানে যেভাবে গতির ঝড় তুলেছিলেন, সোমবার সেখান থেকেই শুরু করলেন রানা। ওপেনার সেদিকুল্লাহ আতালের স্টাম্প ভেঙে আফগান ব্যাটিং লাইন-আপে প্রথম চিড় ধরিয়েছিলেন তিনি। এরপর একের পর এক গোলার মতো বল ছুঁড়ে আফগানদের শরীরে ভয়ের সঞ্চার করেন তিনি।
শারজার স্লো পিচেও গতকাল ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটারের আশেপাশে বোলিং করেন রানা। শেষ ওয়ানডেতে রানার সর্বোচ্চ গতির বলটি ছিল ১৫১ কিলোর।
রানার গতিময় বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইয়ান বিশপ। ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে গতির কারণেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন সাবেক উইন্ডিজ তারকা। বর্তমানে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করলেও বেশি চোখ রাখেন তরুণ পেসারদের দিকেই। যে কারণে বিশপের চোখ এড়িয়ে যায়নি রানাকেও।
বিশপ রানাকে নিয়ে নিজের ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি রানার মতো পেসারদের সমর্থনে জোর দেন। বাংলাদেশকে পরামর্শ দেন, বোলারদের জন্য শীর্ষস্থানীয় কন্ডিশনিং বিশেষজ্ঞ এবং ডায়েটিশিয়ান নিয়োগ করার।
এক্সে বিশপ লেখেন, ‘বাংলাদেশের উচিত আরও বেশি কর্মঠ হওয়া। তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সেরা শক্তি এবং কন্ডিশনিং বিশেষজ্ঞ ও ডায়েটিশিয়ান নিয়োগ করা উচিত। বিশেষ করে নাহিদ রানা এবং তাদের ফাস্ট বোলিং আক্রমণের সঙ্গে তাদের যুক্ত করা উচিত। খুবই চিত্তাকর্ষক গতি।’
সোমবার উইকেট পেয়েছেন, এমন বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে রানাই সবচেয়ে কিপটে বোলিং করেন। ৪ ইকোনমিতে বোলিং করে ২ উইকেট শিকার করেন ডানহাতি পেসার। তার চেয়ে আরও বেশি কিপটে বোলিং করা নাসুম আহমেদ ২.৪ ইকোনমিতে বোলিং করলেও কোনো উইকেট নিতে পারেননি। বাকি বোলারদের সবাই পাঁচের বেশি ইকোনমিতে বল করেন।
এমএইচ/জিকেএস