সামাজির যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে রাজ্যের ট্রল। তার ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ, স্ট্রাইকরেট নিয়ে নানা ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ। যা দেখে ও পড়ে মনে হবে নাজমুল হোসেন শান্ত বুঝি কিছুই পারেন না। শুধু শুধু জাতীয় দলে খেলছেন এবং ক্যাপ্টেন্সিও করছেন। কিন্তু আসলে কি তাই?
ব্যাটার শান্ত কি এতটা খারাপ? পরিসংখ্যান কিন্তু তা বলছে না। হ্যাঁ, তার সাম্প্রতিক সময়টা তেমন ভাল কাটছে না। ব্যাটে রান নেই। তবে নাজমুল হোসেন শান্তর শনির দশা মূলতঃ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে । তার যত রান খরা, ২০ ওভারের ক্রিকেটে।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে ২০২৪ সালের ৬ মার্চ সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৮ বলে ৫২ রানের হার না মানা ইনিংসের পর গত ১৯ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আর হাফ সেঞ্চুরি নেই শান্তর।
টেস্ট আর ওয়ানডেতে কিন্তু অবস্থা ততটা খারাপ নয়। তিন টেস্ট আগে কানপুরে ভারতের সাথে আছে ‘বিগ ফিপটি’ (৮২)। আর ওয়ানডেতে শেষ ১০ ম্যাচে শান্তর ব্যাটে রানের ফলগুধারা (৯০, ৪৫, ১৫, ৬, ৫১*, ১২২*, ৪০, ১, ৪৭ ও ৭৬ = ৪৯৩) বইছে।
যেহেতু এ বছর মার্চের পর বাংলাদেশ আর ওয়ানডে খেলেনি। বেশিরভাগ টি-টোয়েন্টি আর টেস্ট খেলেছে টাইগাররা। এর মধ্যে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে শান্তর রান খুব কম, তাই অনেকেরই ধারনা শান্ত বুঝি সব ফরম্যাটেই ফেল করেছেন। আসলে তা নয়।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, শেষ ১০ ওয়ানডেতে একটি শতরানসহ শান্তর ব্যাট থেকে বেরিয়ে এসেছে ৩টি ফিফটি। তিনবার চল্লিশের ঘরে আউট হয়েছেন। আর ২ বার তার ব্যাট দু’অংকে পৌঁছেনি। একবার আউট হয়েছেন ১৫’তে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ সিরিজেও শান্ত ছিলেন বেশ ভাল ফর্মে। আগের ২ ম্যাচে তিন নম্বরে নামা শান্তর সংগ্রহ (৪৭ ও ৭৬) ১২৩। প্রথম ম্যাচে শান্ত অর্ধশতক থেকে মাত্র ৩ রান দুরে আউট হওয়ার পরপরই শুরু হয় মড়ক। আর গত ৯ নভেম্বর দ্বিতীয় খেলায় শান্ত দীর্ঘ সময় (৪০.২ ওভার পর্যন্ত) একপ্রান্ত আগলে রেখে ১১৯ বলে ৭৬ রানের দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন।
ওই ইনিংসের ওপর ভর করে বাংলাদেশ পৌঁছে যায় আড়াইশোর (২৫২) ঘরে। ওই দায়িত্বপূর্ণ ইনিংসটির জন্য শান্ত হন ম্যাচ সেরা।
আফগানদের সাথে ওয়ান ডাউনে ব্যাট করে দুই ইনিংসে দলে টপ স্কোরার হয়ে শান্ত জানান দিলেন, টি-টোয়েন্টি আর টেস্টে না পারলেও ওয়ানডেতে তিনি নিয়মিতই রান করতে পারেন। তার ব্যাটের ওপর এখনো নির্ভর করাই যায়।
আজ সোমবার আফগানিস্তানের সাথে শেষ ম্যাচে টপ অর্ডারে শান্তর অনুপস্থিতি টের পাওয়া গেছে। তার জায়গায় খেলা জাকির হাসান (৩) কিছুই করতে পারেননি। প্রথম উইকেটে পঞ্চাশ পেরিয়ে (৫৩) করার পরও ৫৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। এ ম্যাচের ক্যাপ্টেন মেহেদি হাসান মিরাজ ৪ নম্বরে নেমে হাল না ধরলে করুণ পরিণতি হতো। ইনিংস শেষ হয়ে যেতে পারতো প্রথম ম্যাচের মত ১৪০-১৫০ এর ঘরেই।
এআরবি/আইএইচএস