শেষ চার ইনিংস বড্ড বেশি খারাপ খেলে ফেলেছেন। শেষ ৪ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে এসেছে মোটে ৬ রান। আফগানিস্তানের সাথে আগের ২ ম্যাচে ২ ও ৩ রান করার আগের ২ ম্যাচে রান করেছিলেন মোটে ১ আর ০। শেষ চার ম্যাচে এত বেশি খারাপ খেলায় স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, ৩৮ পেরিয়ে গিয়ে এত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রিয়াদের ব্যাটের অবস্থা যদি এত জীর্ণ-শীর্ণ হয় তাহলে আর তাকে খেলানোর যৌক্তিকতাই বা কি? তার পরিবর্তে তরুণ কাউকে খেলানোইতো যুক্তিযুক্ত। পাশাপাশি এমনও কথা উঠেছে যে, তবে কি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যারিয়ারের সূর্য ডুবুডুবু?
কিন্তু পরিসংখ্যান বলছিল ভিন্ন কথা। ওই চার ম্যাচের আগের ৯ ম্যাচে রিয়াদের ব্যাট কিন্তু হাসছিল। ওই ৯ ম্যাচে একটি শতক আর একটি অধর্শতক ও দুটি চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংস (৪১, ৪৬, ১১১, ২০, ৫৬, ২২, ৩২, ৩৭) আছে রিয়াদের।
আজ সোমবার শারাজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আবারও ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে রিয়াদ জানান দিলেন, ‘নাহ! আমি এখনো ফুরিয়ে যাইনি।’
বয়স যাই হোক রিয়াদ খেললেন বল সমান ৯৮ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস। আজকাল কাঁচা-পাকা দাড়ির রিয়াদকে দেখে মনে হয়, বয়সের ভারে নুহ্য। কিন্তু আজ সোমবার রিয়াদের শরীরি অভিব্যক্তি, রানিং বিটুইন দ্য উইকেট আর ব্যাট চালনা দেখে মনেই হয়নি তিনি ৪০’এর খুব কাছে।
সেঞ্চুরির জন্য শেষ বলে ৩ রান দরকার থাকা অবস্থায় রান আউট হয়ে যাওযার আগে রিয়াদ খেলেছেন তেজোদ্দীপ্ত ইনিংস। বিপদ কাটাতে রয়ে-সয়ে খেলেছেন অনেকটা সময়। তারপর মিরাজের সাথে জুটি জমে ওঠার পর থেকে যেন খোলস পাল্টে যায় রিয়াদের।
একের পর এক সাহসী শটস খেলতে থাকেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটার। ৪০ নম্বর ওভারে ৬৩ বলে ৪ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় পঞ্চাশ পূরণের পর একের পর এক আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেন রিয়াদ। পরের ৪৮ রান আসে ৩৫ বলে ৩ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কা থেকে।
৬ নম্বরে রিয়াদ যখন ক্রিজে যান, তখন বাংলাদেশের অবস্থা বেশ খারাপ; ৪ উইকেটে রান তখন ৭২। এ রকম অবস্থায় রিয়াদ আর মেহেদি হাসান মিরাজ সব দায় দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে চরম বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করে ১৪৫ রানের জুটি গড়ে দলকে পৌঁছে দেন সোয়া দু’শো রানের দোরগোড়ায়।
এ ম্যাচের ক্যাপ্টেন মিরাজ ১১৯ বলে ৬৬ রানের স্লথ অথচ দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে আউট হওয়ার পর জাকের আলী ও নাসুম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে না পারলেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এগিয়ে যাচ্ছিলেন শতরানের দিকে।
কিন্তু শেষ ৫ বলে কোন বাউন্ডারি কিংবা ছক্কা হাঁকাতে না পারায় কাঙ্খিত শতকের দেখা পাননি এ অভিজ্ঞ ও বর্ষিয়ান যোদ্ধা। ওই ৫ বল থেকে মাত্র ৪ রান করায় আর শতরানের দেখা মেলেনি রিয়াদের।
তারপরও তার একার চেষ্টায় ৫০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ২৪৪-এ। দলকে এতদুর টেনে আনার মূল কৃতিত্বটা রিয়াদের। আর ঠিক পরের ভূমিকাটি এ ম্যাচের অধিনায়ক মেহেদি মিরাজের।
এআরবি/আইএইচএস/