নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বকেয়া বেতনের দাবিতে অবন্তী কালার নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত সড়কটি অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
বিকেল ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে গেছেন। তবে সড়কের দুপাশে অবস্থান নিয়ে আছেন তারা।
এদিকে শ্রমিকদের অবরোধের কারণে পঞ্চবটি-মুন্সীগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মুন্সীগঞ্জ থেকে এ রুট দিয়ে ঢাকায় যাতায়াতকারীরা ভোগান্তিতে পড়েন। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, বিজিবি, শিল্প ও থানা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এর আগে বিক্ষোভরত শ্রমিকরা সকালে পাশের বিসিক শিল্পাঞ্চলে ঢুকে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর করেন। ফলে নিরাপত্তার কারণে বিসিক শিল্পাঞ্চলের সব কারখানা দুপুরের আগেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নরসিংদীর আওয়ামী লীগ নেতা আসলাম সানির মালিকানাধীন ক্রোনী গ্রুপের ২টি পোশাক কারখানা রয়েছে। গত বছর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে প্রায়ই বিক্ষোভ করেন।
অবন্তী কালার পোশাক কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক জাহানারা বেগম বলেন, গত বছর থেকে এ কারখানার মালিক বেতন নিয়ে গড়িমসি শুরু করেন। আগস্ট মাস থেকে আমাদের বেতন বকেয়া। বেতন না দিয়ে গতমাসে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়। অনেকের কাছে আমরা গেছি, কোনো সমাধান পাই নাই। আজকে তাই বাধ্য হয়ে সড়কে নামছি।
বিসিকের আর-ফোর নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক শাহিদা আক্তার বলেন, আমাদের লাঞ্চ হয় সাড়ে ১২টায়। কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর করায় ভয়ে বাকি কারখানাগুলো ছুটি দিয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই ক্রোনী গ্রুপের কারখানা দুটিতে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে অসন্তোষ চলছে। গত এপ্রিলে ক্রোনী গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্সের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। ওই সময় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৬০ জন আহত হয়েছিলেন।
বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্পাঞ্চলে ৪৩২টি কারখানা রয়েছে। তবে সব কারখানায় কাজ নেই। বিসিকের বাইরের একটি গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বিসিকের অধিকাংশ কারখানা লাঞ্চের আগেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সেলিম বাদশা জানান, ক্রোনী ও অবন্তী কারখানার মালিক শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য আলোচনা করছি।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, সকালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলেও বিকেলে সড়ক থেকে সরে গেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আছেন।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/জেডএইচ/এমএস