সোনা ও রুপার তাসবিহ ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। পুরুষ ও নারী সবার জন্যই নিষিদ্ধ। যেমন সোনা-রুপার প্লেট, গ্লাস, সুরমাদানি ইত্যাদি সামগ্রী ব্যবহার করা পুরুষ ও নারীর জন্য নিষিদ্ধ। হোজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
لَا تَلْبَسُوا الْحَرِيرَ وَلَا الدِّيبَاجَ وَلَا تَشْرَبُوا فِي آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَا تَأْكُلُوا فِي صِحَافِهَا فَإِنَّهَا لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَهِيَ لَكُمْ فِي الْآخِرَةِ
আপনারা মোটা কিংবা মিহি রেশমী বস্ত্র পরিধান করবেন না এবং সোনা ও রুপার পেয়ালায় পান করবেন না এবং প্লেটে খাবেন না। এগুলো দুনিয়াতে কাফেরদের জন্য এবং আখেরাতে মুমিনদের জন্য। (সহিহ বুখারি: ৫৮৩১, মুসলিম: ২০৬৭)
উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
الَّذِي يَشْرَبُ فِي إِنَاءِ الْفِضَّةِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِي بَطْنِه نَارَ جَهَنَّمَ
যে ব্যক্তি রুপার পাত্রে পান করে সে যেন তার পেটে জাহান্নামের আগুন ঢালে। (সহিহ বুখারি: ৫৬৩৪)
উল্লেখ্য, তাসবিহ পাঠ করা বা জিকির করার সুন্নাহ পদ্ধতি হলো আঙুলে গুণে জিকির করা। রাসুল (সা.) আঙুলে গুনে জিকির করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি নবিজিকে (সা.) নিজের হাতে গুণে গুণে তাসবিহ পাঠ করতে দেখেছি। (সুনান তিরমিজি: ৩৪৮৬)
অন্য একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, নবিজি (সা.) সাহাবিদের আঙুলে গুনে তাসবিহ পাঠ করার নির্দেশও দিয়েছেন এবং বলেছেন আখেরাতে এই আঙুলগুলো আল্লাহর দরবারে তার আমলের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে। ইউসাইরা বিনকে ইয়াসির (রা.) বলেন, নবি (সা.) একদিন নারী সাহাবিদের উদ্দেশে বললেন,
يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ اعْقِدْنَ بِالأَنَامِلِ فَإِنَّهُنَّ مَسْئُولاَتٌ مُسْتَنْطَقَاتٌ
তোমরা আঙুলে গুনে গুনে তাসবিহ পাঠ কর; এগুলোকে জিজ্ঞাসা করা হবে এবং তারা সাক্ষ্য দেবে। (সুনান তিরমিজি: ৩৪৮৬)
তবে প্রচলিত তাসবিহ ব্যবহার করাও জায়েজ, বিদআত নয়। কারণ নবিজির সাহাবিদের অনেকে আঙুল ছাড়া খেজুরের বিচি বা পাথরকুচি গুণে জিকির করেছেন এরকম তথ্যও পাওয়া যায়। হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তিনি খেজুরের বিচি ও পাথরকুচি গুনে তাসবিহ জপতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ২/২৮২)
এছাড়া আরেকটি হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, একবার রাসুল (সা.) একজন নারী সাহাবিকে খেজুরের বিচি বা পাথরকুচি গুণে তাসবিহ জপতে দেখেও এভাবে তাসবিহ জপতে নিষেধ করেননি। (সুনান তিরমিজি: ২/১৯৭)
ওএফএফ/জেআইএম