চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নাগালের বাইরে আলুর দাম। গত এক সপ্তাহে কেজিতে অন্তত ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিক্রেতাদের শঙ্কা, আলুর দাম আরও বাড়তে পারে। সোমবার (১১ নভেম্বর) মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে এ তথ্য।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে ডায়মন্ড নামে পরিচিত বিক্রমপুরের আলু ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে পাঁচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০-৩৫০ টাকায়। কেজিতে পড়ছে ৬৬-৭০ টাকা।
অথচ গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি আলু ৫৫-৬০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে অন্তত ১০-১৫ টাকা।
দোকানিদের দাবি, পাইকারি বাজারে আলুর দাম বেড়েছে। ৬৮-৬৯ টাকায় প্রতি কেজি আলু পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ ও নষ্ট আলু বাদ দেওয়ার পর প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৭২-৭৩ টাকা। তাই বাধ্য হয়ে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড়তাকিয়া বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, শুনেছি আলুর দাম আরও বাড়বে। গত চারদিনেই কেজিতে ১০ টাকা দাম বাড়ছে। নতুন আলু ওঠার আগে এ দাম আর কমবে না। আলুর দাম ১০০ টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে একই বাজারে আনোয়ার হোসেন নামের এক বিক্রেতাকে আবার ৬৫ টাকায় আলু বিক্রি করতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, আমি এক সপ্তাহ আগে ৬০ টাকা দরে আলু কিনে এনেছি। বিক্রি করছি ৬৫ টাকায়। এখন দাম বেড়েছে শুনেছি। যদি বেশি দামে কিনতে হয়, তাহলে বেশি দামে বিক্রি করবো।
বড়দারোগাহাট বাজারের পাইকারি বিক্রেতা জানে আলম বলেন, এক সপ্তাহ আগেও আলুর পাল্লা বিক্রি করেছি ২৮০ টাকায়। এখন বিক্রি করছি ৩৫০ টাকায়। দাম বাড়বে কি না, জানি না। যদি সরবরাহ কম থাকে, তাহলে বাড়বে। আর সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে। তবে এখন আলুর মৌসুম শেষের দিকে, যার কারণে দাম না কমার শঙ্কাই বেশি।
নতুন আলু বাজারে উঠতে এখনো দেড়-দুই মাস সময় লাগবে বলে জানান এ বিক্রেতা।
জাহিদ হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, আলুর দাম মাঝে কমেছিল কিছুটা। দাম আরও কমবে, এই আশায় তখন কিনিনি। কিন্তু এখন দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
মিরসরাই পৌর বাজারে নুরুল ইসলাম নামে ক্রেতা বলেন, সকালে ভ্যানে করে ৭৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখলাম। ভ্যানে যদি দাম ৭৫ টাকা হয়, তাহলে দোকানে কত হবে? আর সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?
মিঠাছরা বাজারে আসা ক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, সব পণ্যের দামই বাড়ছে। কোনটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আর কোনটি আলোচনার বাইরে থেকে যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ ঠিকই বেশি দামে ওইসব পণ্য কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন। আসলে বাজারে কারো নিয়ন্ত্রণ নেই।
মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী জানান, শিগগির বাজারে গিয়ে মনিটরিং করবো। কেনা দামের চেয়ে যদি অতিরিক্ত দামে বিক্রি হয় তাহলে অভিযান চালানো হবে।
এম মাঈন উদ্দিন/জেডএইচ/জেআইএম