বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে অর্থের যোগানদাতা ও রাজধানীর বংশাল এলাকায় আন্দোলনরত নিরীহ ছাত্র হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান আসামি সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে র্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) তাপস কর্মকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত জুলাই থেকে দেশব্যাপী কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তী সময় তা গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। কোটা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শ্রেণীর নেতাকর্মী ও অস্ত্রধারী সস্ত্রাসীরা দেশি-বিদেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত আক্রমণ করে।
যার অংশ হিসেবে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর বংশাল থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা শান্তিপূর্ণভাবে কোটা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করার সময় বেশকিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র, রাম-দা, চাপাতি, হকি স্টিক এবং লাঠি-সোটাসহ বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালায়।
এছাড়াও ছাত্র-জনতার যৌক্তিক কোটা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-ছাত্রীসহ একাধিক আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও গুজব রটায় এবং তাদেরকে গুম ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার বাদামতলী ও বংশাল এলাকায় ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের অর্থের যোগানদাতা ও একজন নিরীহ ছাত্রকে হত্যার অভিযোগে ভুক্তভোগীদের পরিবার বংশাল থানায় বাদামতলী ফল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের প্রধান সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ চেয়ারম্যানসহ শতাধিক আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে সিরাজসহ অন্যান্য আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
এএসপি তাপস কর্মকার আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে আক্রমণকারীদের অর্থের যোগানদাতা এবং বংশাল এলাকায় আন্দোলনরত একজন নিরীহ ছাত্রকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সিরাজসহ অন্যান্য আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর বংশাল থানাধীন সিদ্দিক মার্কেট এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্তার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এছাড়াও রাজধানীর বংশাল এবং সাতক্ষীরা সদর থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
টিটি/এসএনআর/এমএস