ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। এপার বাংলায়ও দর্শকপ্রিয়তা ছিল তার। ১৯৯৭ সালে ‘স্বামী কেন আসামি’ সিনেমার মাধ্যমে ঋতুপর্ণা এদেশের সিনেমাপ্রেমীদের কাছের মানুষ হয়ে যান। আজ (৭ নভেম্বর) এই অভিনেত্রীর ৫৩তম জন্মদিন।
‘স্বামী কেন আসামি’ সিনেমা দিয়ে ঢাকায় তার যাত্রা শুরু হয়। তবে তাকে আলোচিত-সমালোচিত করেছিল ‘রাঙা বউ’ সিনেমাটি। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পায় ছবিটি। সেখানে ঋতুপর্ণা অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে। দুজনার রসায়ন সেসময় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছিল। এক শ্রেণির দর্শক তাদের অভিনয় ভীষণ পছন্দ করেছেন। মুক্তির পরপরই এটি হিট সিনেমার তালিকায় স্থান করে নেয়। হুমায়ুন ফরীদি ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জুটিকে লুফে নেন দর্শক। ঋতুপর্ণা এখনো বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে অভিনয় ও রসায়নের কথা স্মরণ করেন।
এক সাক্ষাৎকারে ঋতুপর্ণা বলেছিলেন, ‘ক্যারিয়ারে অনেক অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তাদের মধ্যে ফরীদি ভাইয়ের সঙ্গে সুখস্মৃতি মনে রাখার মতো। একজন মানুষ কতটা পরিপূর্ণ অভিনেতা হতে পারেন, একই সঙ্গে ভালো মনের মানুষ হতে পারেন, তার উদাহরণ ছিলেন ফরীদি ভাই। তার সঙ্গে অভিনয় করে আমি সমৃদ্ধ হয়েছি।’
হুমায়ন ফরীদির সঙ্গে ‘রাঙা বউ’ সিনেমাটিতে ঋতুর খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় কাঁপিয়ে দিয়েছিল বিনোদন অঙ্গন। একে অনেকেই অশ্লীল সিনেমার তকমা দিয়েছিলেন। এ নিয়েও কথা বলেছিলেন ঋতুপর্ণা। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘শেষ পর্যন্ত “রাঙা বউ” সুপারহিট সিনেমা। অনেক সাফল্য পেয়েছে সিনেমাটি। “রাঙা বউ’-এর সবচেয়ে মজার ব্যাপারটা ছিল, খুব গ্ল্যামারাস সিনেমা এবং খুব গ্ল্যামারাস একটা গল্প। ফরীদি ভাই খুবই বিচক্ষণ ব্যক্তি ও অসাধারণ অভিনেতা। আমরা চেষ্টা করেছি, যতটা ইন্টারেস্টিংভাবে দৃশ্যগুলো করা যায়।’
ঋতুপর্ণা আরও বলেন, `সিনেমার চরিত্রের মধ্যে অস্বাভাবিকতা ছিল, যেটা পরিচালক দেখাতে চেয়েছিলেন। তার মধ্যে সাইকোলজিক্যাল ডিজব্যালান্স ছিল, অ্যাবনরমালিটি ছিল। তো সেই অস্বাভাবিকতাগুলো দেখাতে গেলে হয়তো কিছু কিছু জিনিস ক্রুড মনে হয়। শেষ পর্যন্ত আমার মনে হয়, অতটা করা হয়নি। তবে এখানে অবশ্যই কিছুটা সেনসিভিটি আছে। সেই জায়গাগুলোতে হয়তো কিছুটা প্রভোকড হয়েছ।’
ঋতুপর্ণা ‘স্বামী কেন আসামি’, ‘রাঙা বউ’, ‘তোমার আমার প্রেম’, ‘মেয়েরাও মানুষ’, ‘আহারে’সহ ঢাকাই চলচ্চিত্রের অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার পূর্বপুরুষদের শেকড়ও বাংলাদেশে। মায়ের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে আর বাবার বাড়ি ছিল বিক্রমপুরে। সব মিলিয়ে এদেশের মানুষ ও সংস্কৃতির প্রতি রয়েছে তার গভীর অনুরাগ।
এমএমএফ/আরএমডি/এএসএম