লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে লেবানিজ জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ১৩ মাসে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল সংঘাতে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২ জন নিহত ও ১৩ হাজার ৪৯২ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫৮৯ জন নারী এবং ১৮৫ জন শিশু রয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, তাদের আক্রমণে শতাধিক হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তবে প্রত্যক্ষদর্শী এবং বোমা হামলার শিকার লেবাননের বিভিন্ন এলাকার জনগোষ্ঠীর তথ্য বলছে, বেসামরিক লোকদের মধ্যেই প্রাণহানির হার বেশি।
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে প্রতিদিন অন্তত একজন শিশু নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, হাজার হাজার শিশু, যারা এই নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণ থেকে বেঁচে গেছে, তারা এখন এই সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
সংঘাতের ফলে প্রায় ১২ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে, যা লেবাননের মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশের বেশি। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল ছেড়ে শরণার্থীরা প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে লেবানন থেকে প্রায় ২৮ হাজার মানুষ ইরাকে পৌঁছেছেন। পাশাপাশি, সিরিয়ায় প্রবেশ করেছেন প্রায় ৪ লাখ ৭২ হাজার লেবানিজ শরণার্থী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, লেবাননের জরুরি চিকিৎসা সেবার ওপর ২০১টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৫১ জন নিহত হয়েছেন। সহিংসতার কারণে ত্রাণ কার্যক্রমও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি অভিযোগ করেছেন, আলোচনার মাধ্যমে অস্ত্রবিরতি প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি করছে ইসরায়েল। তিনি বলেন, ইসরায়েলের কূটনৈতিক সংকেতগুলো ইঙ্গিত দেয়, তারা সহিংসতা ও ধ্বংস চালিয়ে যাওয়ার নীতিতেই অনড়।
সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/