বাতিল হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে থাকা সব মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ক্লুনি ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিসের ট্রায়ালওয়াচ ইনিশিয়েটিভ ও বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। এ বিষয়ে যৌথভাবে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।
শনিবার (২ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানায় সিজিএস। প্রকাশিত শ্বেতপত্রে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে, যা দেশের কঠোর সাইবার আইনগুলোর পুনর্মূল্যায়নের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। সাম্প্রতিক সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে তিনটি সাইবার আইনের আওতায় থাকা সব ‘মতপ্রকাশ সম্পর্কিত’ মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা যথার্থ দিকনির্দেশনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে বহুদিন ধরে এমন কিছু আইন প্রচলিত রয়েছে, যেগুলো আপত্তিকর মন্তব্য, মিথ্যা তথ্য, কিংবা এমন কোনো তথ্য যা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে ইত্যাদি সংবেদনশীল শব্দগুলোর অস্পষ্ট সংজ্ঞা দিয়ে আইনের মাধ্যমে মানুষের মতপ্রকাশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে।
প্রকৃত অর্থে এসব আইনকে ব্যবহার করে রাজনৈতিকভাবে ভিন্নমতকে দমন করা হয়েছিল এবং গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী ও সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এসব আইন প্রথমে ২০০৬ সালের আইসিটি আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, পরে এটি ২০১৮ সালের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালের সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট (সিএসএ)- এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যদিও প্রতিটি নতুন আইন প্রণয়নের সময় বলা হয়েছে এটি আগের তুলনায় সংস্কার করা হয়েছে, মূলত আইনগুলোর প্রায় সব ধারা বা নিষেধাজ্ঞা একই রকম রয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ট্রায়ালওয়াচের পর্যবেক্ষণে থাকা একটি মামলাও এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।
এ বিষয়ে সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, হ্যাকিং, যৌন হয়রানি ও অন্যান্য গুরুতর সাইবার অপরাধের বিচার হওয়া গুরুত্বপূর্ণ হলেও, বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা আইন অত্যন্ত অস্পষ্ট ও প্রশ্নবিদ্ধ। এর মধ্যে বিরোধী মতকে দমন করার অনেক উপাদান রয়েছে। তাই আমরা এ আইনের অধীনে দায়ের করা সব মামলাকে বাতিল করার আহ্বান জানাই।
এসএম/এমএএইচ/