ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এইচ এম আবু মুসা বলেছেন, বিগত সময়ে স্বৈরাচারী শাসনের কারণে চাপে ছিলাম। তবে আমাদের সংগঠন কখনোই নিষ্ক্রিয় ছিল না। প্রতিবছরই আমাদের নতুন কমিটি হয়েছে। আমার সবসময়ই কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। তাই আমরা প্রকাশ্যে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করিনি, এটি শতভাগ সত্য নয়।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি।
এর আগে সোমবার (২৮ অক্টোবর) সংগঠনটির পল্টন ট্র্যাজেডি দিবসের আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে প্রকাশ্যে আসেন ইবি শাখার সভাপতি ও সেক্রেটারি।
আবু মুসা বলেন, ‘দাবি-দাওয়া আদায়ে দল-মত ভুলে সব সাধারণ শিক্ষার্থীকে একটি জায়গায় এসে দাঁড়াতে হবে। আন্তর্জাতিকীকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য উপাচার্য যে চিন্তাগুলো করছেন, আমরা সবাই মিলে যদি সহযোগিতা করি তাহলে প্রশাসন সেই কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবে। আমাদের পক্ষ থেকে সবাইকে একসঙ্গে থেকে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ছাত্ররাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে শিক্ষার্থীরা দেশে ছাত্ররাজনীতির যে রূপ দেখেছে তা মূলত ছাত্ররাজনীতি নয়। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, হল থেকে নামিয়ে দেওয়া ও শিবিরসহ বিরোধীমত দমনে হামলা করেছে, মামলা দিয়েছে। বিগত ১৬ বছর শিক্ষার্থীরা এসবই দেখছে আর এগুলোকেই ছাত্ররাজনীতি ভাবছে। এগুলো ছাত্ররাজনীতির কার্যক্রমের অংশ হতে পারে না। আমরা স্পষ্ট করছি, ছাত্রশিবির কোনো লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন নয়। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনোভাবের সঙ্গে ছাত্রশিবির সম্পূর্ণ একমত। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যা চায়, একটি দায়িত্বশীল ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরাও তাই চাই।’
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে শিবিরের সম্পর্কের বিষয়ে আবু মুসা বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে সাংবিধানিকভাবে (দলীয় গঠনতন্ত্র) আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ছাত্রশিবির একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। তবে আদর্শগত দিক থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের মিল রয়েছে।’
ক্যাম্পাসে সংস্কৃতি চর্চার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি বলেন, ‘ছাত্রশিবির সুষ্ঠু সংস্কৃতি চর্চায় বিশ্বাস করে। সেক্ষেত্রে ক্যাম্পাসে যেকোনো মতের সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের নিজস্ব মত অনুযায়ী সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে পারবে। এখানে ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমাদের বাধা দেওয়ার কিছু নেই। এটা তাদের মৌলিক অধিকার।’
ছাত্রশিবিরে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ না থাকার বিষয় নিয়ে আবু মুসা বলেন, ‘অন্যান্য সংগঠনের চেয়ে আমরা নারীদের বেশি স্পেস দিয়ে থাকি। ছাত্রীসংস্থা নামের তাদের আলাদা প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। নারীদের থেকেও যেন জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব তৈরি হয় সেজন্য তাদের এই আলাদা স্পেস দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে তাদের নিজস্ব কমিটি রয়েছে। তারা নিজেদের মতো করে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তবে দাবি-দাওয়া ও বিভিন্ন অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা একসঙ্গেই আন্দোলন করে থাকি।’
মুনজুরুল ইসলাম/এসআর/এমএস