বাকশাল সংক্রান্ত সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে ব্যারিস্টার এএসএম শাহরিয়ার কবির এ রিট দায়ের করেন।
এ বিষয়ে রোববার (২৭ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হতে পারে বলে জানান এই আইনজীবী।
ব্যারিস্টার এ এস এম শাহরিয়ার কবির বলেন, চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় ব্যবস্থার পরিবর্তে রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে এবং একদলীয় রাজনীতি (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ-বাকশাল) চালু করে। শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি এ সংশোধনী আনা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, উল্লিখিত সংশোধনীটি একাধিক দলীয় পদ্ধতির ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক সংসদীয় পদ্ধতির সরকারকে প্রতিস্থাপিত করেছে; যা এক ব্যক্তির রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারে, একক দলের ভিত্তিতে স্বৈরাচারী চরিত্রের ভিত্তিতে এবং উল্লিখিত সংশোধনী কোনো জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই রাতারাতি সংঘটিত হয়েছিল।
স্বাধীন মতপ্রকাশ, সমিতি, মিছিলের মৌলিক অধিকার অস্বীকার করা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ ব্যতীত সমস্ত রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং যে সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেননি তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও তাদের আসন হারান। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যার ফলে বিচারকদের অপসারণ করতে হবে নির্বাহী বিভাগের ইচ্ছায়; অধস্তন বিচার বিভাগের নিয়োগ, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা এবং অধস্তন আদালতের ওপর নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেওয়া হয়।
পিটিশনে বলা হয়, সংসদের চতুর্থ সংশোধনী সংসদকে দেওয়া সংশোধনী ক্ষমতার বাইরে ছিল এবং এর ফলে এ ধরনের সংশোধনী আল্ট্রা ভাইয়ার। অনুচ্ছেদ ১৪২-এর বাধ্যতামূলক বিধান যে, ‘সংশোধনের জন্য কোনো বিল অগ্রসর হবে না যদি না এর দীর্ঘ শিরোনাম স্পষ্টভাবে দেখায় যে সংবিধানের কোনো অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে’, কিন্তু ওই সংশোধনের সময় উল্লিখিত বিধানটি মেনে চলা হয়নি এবং এর ফলে সংশোধনী বাতিল হয়ে যায়।
সংসদের সংশোধনী ক্ষমতা সীমাহীন নয়, বরং তা সীমাবদ্ধ এবং সংসদ যেভাবে আইন সংশোধন বা বাতিল করে সেভাবে সংসদ সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে না। বাধ্যতামূলক প্রয়োজনীয়তা অনুসরণ না করে, উল্লিখিত সংশোধনীটি সংবিধানের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্যের মৌলিক কাঠামোকে মূলত ধ্বংস, ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রভাবিত করেছে ও সেইজন্য উল্লিখিত সংশোধনীটি অতি ভয়ঙ্কর।
এফএইচ/বিএ/এমএস