তারকা বলে কথা। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে তবেই তারা সিনেমায় কাজ করেন। আর সেই সাথে পরিচালক, প্রযোজকদের প্রায়ই জুড়ে দেন নানান শর্ত। এসব শর্তের বেশিরভাগই খুব অদ্ভুত।
বলিউডের কিং শাহরুখ খান এখন নিজেই সিনেমা প্রযোজনা করেন। তবে যখনই অন্য প্রযোজনা সংস্থার সিনেমায় অভিনয় করেন, শুধু লভ্যাংশ নেন। পারিশ্রমিক নিতে মোটেও রাজি নন তিনি। একবার শুটিং সেটে ঘোড়ায় চড়ে অভিনয় করতে গিয়ে মারাত্মক আহত হয়েছিলেন শাহরুখ। এরপর থেকে কোনো সিনেমায় চুক্তি করার সময় ঘোড়ায় না চড়ার শর্ত জুড়ে দেন তিনি।
পর্দায় চরিত্রের প্রয়োজনে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করতে হয় অনেক শিল্পীকেই। কিন্তু এতে বাধ সেধেছেন বলিউডের বেশ ক’জন তারকা। অভিনেত্রী সোনাক্ষি সিনহা কেবল চুম্বন দৃশ্য নয়, কোনো ধরনের ঘনিষ্ঠ দৃশ্যেই অভিনয় করতে রাজি নন তিনি।
একই নীতিতে অটল বলিউডের ভাইজান সালমান খানও। তিনি বলেন, আমি একজন নায়ক। আমাকে পর্দায় দেখে অনেকেই অনেক কিছু শেখেন। তাই আমি কোনো খলচরিত্র বা ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করব না। আমিই নিজেকে খারাপ লোক হিসেবে দেখতে চাই না।
ক্যারিয়ারের শুরুতে কারিনা কাপুর ‘চামেলি’র মতো ছোট বাজেটের সিনেমায় অভিনয় করলেও পরে সিদ্ধান্ত নেন, প্রথম সারির অভিনেতা ছাড়া কাজই করবেন না। কারিনার সেই মানসিকতা নাকি সাইফের সাথে দীর্ঘদিন সংসার করায় পাল্টেছে। তাই এখন এ-লিস্টারদের ‘আর্মক্যান্ডি’ হওয়ার চেয়ে কনটেন্টের ওপর জোর দিচ্ছেন তিনি।
ওভার টাইমের রীতি চলচ্চিত্রে প্রচলন করেছেন হৃতিক রোশন। শিডিউলের বাইরে অতিরিক্ত সময় কাজ করালে বাড়তি টাকা দিতে হবে, এমন শর্তেই সিনেমা করতে রাজি হন ঋতিক। এদিকে তার এক সময়ের প্রাক্তন প্রেমিকা কঙ্গনা সিনেমা মুক্তির আগে ফাইনাল এডিট অবশ্যই তার মনমতো হতে হবে, এমন শর্তেই চুক্তিবদ্ধ হন সিনেমায়।
‘পারফেকশনিস্ট’ আমিরও স্ক্রিপ্ট নিয়ে মাথা ঘামান, পরিচালকের প্রাণ ওষ্ঠাগত করে ছাড়েন। আমিরের একটা শর্তের কথা অনেকেই জানেন না। সিনেমাতে তার কোনো লো-অ্যাঙ্গল শট থাকবে না! শুটিংয়ের শুরুতেই তাই সিনেমাটোগ্রাফারদের কড়া নির্দেশ দেয়া থাকে এ ব্যাপারে।
অক্ষয়কে কাস্ট করা মানেই দিনে আট ঘণ্টার বেশি শুট নয়। সন্ধ্যা ছয়টা বাজলেই বাড়ি ফেরা। আর রোববার তার ছুটির দিন। ৪০ দিনেই সিনেমা শেষ করেন তিনি।
মুম্বাই সিনেপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত তারকাদের এমন অদ্ভুত শর্ত মানতে গিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে পরিচালক-প্রযোজকদের। এতোকিছুর মধ্যেও থেমে নেই কোনো কর্মযজ্ঞ। সবকিছু ছাপিয়ে তারকারা দ্যুতি ছড়াতে চান রুপালী পর্দায়, আর পরিচালক-প্রযোজকেরও লক্ষ্য থাকে ভাল ব্যবসা করার। ইঁদুর-বিড়ালের এ খেলাই যেনো উপভোগ করেন দর্শক।
/এসএইচ