যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিলো সৌদি আরব ও ইরান। সম্পর্ক জোড়া লাগাচ্ছে দেশ দুটি। বেইজিংয়ে চীনের মধ্যস্থতায় হয়েছে চুক্তি। আগামী দুই মাসের মধ্যেই উভয় দেশে আবারও দূতাবাস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ সম্পর্কে নাক না গলানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে রিয়াদ ও তেহরান। বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন ঘটাতে পারে এই চুক্তি। খবর রয়টার্সের।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই পরাশক্তি ইরান ও সৌদির বৈরি সম্পর্কের ইতিহাস বেশ পুরনো। গেলো ১৫ বছরে তিক্ততা বেড়েছে আরও কয়েকগুণ। ২০১৬ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয় চূড়ান্ত পর্যায়ে।
উপসাগরীয় রাজনীতিতে অস্থিরতার পেছনে মূলত ভূমিকা এই দুই দেশের। সুন্নি প্রধান সৌদি আরব ও শিয়া প্রধান ইরান আঞ্চলিক সংঘাতে বরাবরই পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
বেশকয়েকবার রিয়াদ-তেহরান সম্পর্কের বরফ গলানোর উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন দেশ। অন্যরা ব্যর্থ হলেও এবার সফল হলো চীন। বেইজিংয়ে তিন দেশের বৈঠকে হয়েছে যুগান্তকারী চুক্তি। অবশেষে অবসান ঘটছে দুই পরাশক্তির দীর্ঘদিনের স্নায়ুযুদ্ধের। আগামী দুই মাসের মধ্যে উভয় দেশে হবে দূতাবাস। পরস্পরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে দেশ দুটি। এছাড়া ২০০১ সালে স্বাক্ষরিত নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি সচলেও একমত হয়েছে তারা।
ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলি শামখানি বলেন, দীর্ঘ আলোচনা শেষে আমরা ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে একমত হয়েছি। এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো এবং ইহুদিবাদী শাসনের ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ রোধ করার জন্য আমরা এক হয়েছি। আশা করছি, আমাদের নতুন সম্পর্ক পুরো অঞ্চলের জনগণের উন্নয়ন ও কল্যাণে ভূমিকা রাখবে।
দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, ইরাক, লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। বিশ্লেষকদের মত, অঞ্চলটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে রিয়াদ-তেহরানের এ পদক্ষেপ।
এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ক্রিশ্চিয়ান কোয়েটেস উলরিচসেন বলেন, এই চুক্তিটি মধ্যপ্রাচ্যে ২০১৬ পরবর্তী সময়ের উত্তেজনা কমাতে পারে। সৌদি গেলো দুই বছর ধরেই ইয়েমেন সংঘাত থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে। আশা করছি চুক্তির পর ইয়েমেনে আগামীতে পরিবর্তন দেখবো। সৌদি ও ইরান উভয়পক্ষই সামনে এগিয়ে যেতে চায়। এখন হুতিদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী করবে।
মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের প্রভাব দেখালো চীন। যদিও বৈরি সম্পর্ক থাকা চীনের মধ্যস্থতায় শত্রুদেশ ইরানের সাথে মিত্র সৌদি আরবের নতুন সম্পর্ককে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এটিএম/