রুশ বাহিনীর ছোড়া কিনঝালে বিপর্যস্ত ইউক্রেন

0
0


ইউক্রেনে শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতির ‘হাইপারসনিক মিসাইল- কিনঝাল’ ছুঁড়লো রাশিয়া। বৃহস্পতিবারের (৯ মার্চ) সাঁড়াশি হামলায় বিপর্যস্ত রাজধানী কিয়েভসহ কমপক্ষে ১০টি শহর। এতে প্রাণ গেছে ৯ জনের। আহত আরও শতাধিক মানুষ।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, অন্তত ৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। যার মাঝে ৩৪টি ক্রুজ মিসাইল এবং চারটি শাহেদ ড্রোন ভূপাতিত করা গেছে। তবে ছয়টি কিনঝাল ব্যালিস্টিক মিসাইল, চারটি ড্রোন প্রতিহতে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে ইউক্রেন। সেগুলো কিয়েভ ও জাপোরিঝিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে আঘাত হানে। এর ফলে, অন্ধকারে রাজধানীসহ বেশিরভাগ এলাকার মানুষ।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেনকভ বলেছেন, ইউক্রেনীয় প্রশাসনকে ব্যাপক অভিযানের মাধ্যমে মোক্ষম জবাব দিলো রুশ সেনাবাহিনী। জল-স্থল ও আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে একযোগে। ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, গোলাবারুদ উৎপাদনের কারখানা, বিদেশি অস্ত্রের মজুদ এবং সমরাস্ত্র সারাইয়ের প্রতিষ্ঠান।

হঠাৎ এতো বড় হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলো না ইউক্রেনীয় সেনাবহরও। স্বীকার করে নিয়েছে- সম্প্রতি এতোবড় অভিযান আর হয়নি। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বক্তব্য- এরমাধ্যমে আগুনে ঘি ঢাললো ক্রেমলিন। বলেন, বেসামরিক ইউক্রেনীয়দের ওপর হামলা চালিয়ে যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও উস্কে দিলো সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় রাত কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভুগছেন তীব্র পানির কষ্টে। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের।

নতুন অভিযানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন কিয়েভের লাখ-লাখ গ্রাহক। সবচেয়ে বড় কথা- জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আবারও হয়ে পরেছে অচল। যাতে, উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।

সংস্থাটির মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি বলেন, রাশিয়ার নতুন হামলায় সাড়ে ৭শ’ কিলোভোল্ট বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছে জাপোরিঝিয়ার। চলমান যুদ্ধে, এই নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হলো। জরুরি ডিজেলের মাধ্যমে চলছে কার্যক্রম। এটা ইউরোপের সর্ববৃহৎ পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। অথচ, আমরা সবাই উদাসীন।

মঙ্গলবারই, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা- NIA’র পরিচালক জানিয়েছিলেন, আরও একবছর যুদ্ধ টানতে চায় রাশিয়া। কিন্তু, বড় পরিসরের হামলা চালানোর সক্ষমতা তাদের নেই। ধারণা করা হচ্ছে, এ সমালোচনার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতেই ফের বড় অভিযানে গেছে ক্রেমলিন।

/এমএন