ফয়সাল মাহমুদ:
প্রথম দেখায় যে কারো মনে হতে পারে, ইউরোপ কিংবা উন্নত বিশ্বের কোনো দেশের অত্যাধুনিক সড়ক এটি। যার দুই পাশে রয়েছে ১০০ ফুট চওড়া দৃষ্টিনন্দন খাল। কিন্তু এটি বিদেশে কোনো সড়ক নয়। বলছিলাম, দেশেরই সর্বাধুনিক একমাত্র ১৪ লেনের সড়ক পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের কথা।
তবে সড়কটি নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই ওই পথে চলাচলকারীদের। ২০১৫ সালে তিনশ ফিট রাস্তার যে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়, শেষের দিকে এসে বের হয় পরিকল্পনায় ভুলের বিষয়টি। ২০১৮ সালে এসে আবারও রাস্তা কেটে ফেলে শুরু হয় এক্সপ্রেসওয়ের কাজ।
আগামী সেপ্টেম্বরে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম এই দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ের। যা ভূমিকা রাখবে রাজধানী ঢাকার পশ্চিম-পূর্বের যোগাযোগ ব্যবস্থায়। একাধিকবার শুরুর পর কাজ যখন সমাপ্তির পথে তখন আবারও নতুন করে দেখা দিয়েছে বিপত্তি। এমআরটি লাইন ওয়ানের কারণে উদ্বোধনের পরই ভাঙা পড়বে ১২ কিলোমিটার সড়কটির বেশ কিছু অংশ।
ভোক্তাভোগীরা বলেন, মেট্রোরেল করবে, আবার ভাঙবে। আমরা কয়বার ভোগান্তিতে পড়বো? প্রথম থেকে যদি পরিকল্পনা ঠিকমতো করা হতো তাহলে অনেক টাকা বেঁচে যেতো। আর কয়দিন পরপর নকশা পরিবর্তন করা হয়।
প্রশস্ত এই রাস্তার ঠিক মাঝ বরাবর ওপর দিয়ে যাবে এমআরটি লাইন ওয়ানের কুড়িল থেকে পূর্বাচল অংশটি। তাই উদ্বোধনের পরেই কাটতে হবে হাজার কোটি টাকার সড়ক। এক্সপ্রেসওয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেট্রোরেলে পিলার বসাতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এক্সপ্রেসওয়ের আন্ডারপাসসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
সম্প্রসারিত পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এম এম এহসান জামিল বলেন, মেট্রোরেলের প্রকল্পটির একদম প্রাথমিক অবস্থায় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে কুড়িল-প্রগতি স্বরণী হয়ে কমলাপুর পুরোটাই আন্ডারগ্রাউন্ড। আবার কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত ওভাররেটেড হওয়ার যুক্তিকতা আমি দেখি নাই। এটাও আন্ডারগ্রাউন্ডে হলে কোনো সমস্যা হতো না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই কমানো যেত উন্নয়ন যন্ত্রণা। সুরক্ষিত হতো স্থাপনা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, যে দুইটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, তা খুব অল্প সময়ের মধ্যে হয়েছে। প্রত্যেকেই কিন্তু অবগত ছিল, এই করিডোরে উন্নয়ন করতে গেলে একটু ভাঙচুর করতে হবে। ঢাকায় অনেক উন্নয়ন হচ্ছে, আমাদের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। সমন্বয়হীনতার যে দুর্নাম ছিল, তা এখানে ঘোছানো যেতো।
প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণ করেছে রাজউক। সড়কটি কুড়িল থেকে বসুন্ধরা হয়ে কাঞ্চন ব্রিজ গিয়ে শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়কের সার্ভিস লেন, ফুটওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস ও গ্রেড ইন্টারসেকশনসহ প্রকল্পের ৯৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন। আসছে সেপ্টেম্বরে এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
/এমএন