মাসুদুজ্জামান রবিন:
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীর সম্পৃক্ততা বাড়ছে। ই-কমার্স বা এফ-কমার্সভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় এখন নারী উদ্যোক্তাদের দাপট। এদিকে, নারীর ক্ষমতায়নে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্বও অপরিসীম। তাই এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল প্রযুক্তির উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’।
প্রযুক্তিবিদদের মতে, শহরাঞ্চলের মতো তৃণমূলের নারীদেরও প্রযুক্তি খাতে সম্পৃক্ততায় রাষ্ট্রের আরও ভুমিকা রাখতে হবে। ঋণ প্রাপ্তি সহজ করারও পরামর্শ দিচ্ছেন নারী উদ্যোক্তারা।
দেশে বর্তমানে ই-কমার্সের সাথে জড়িত ২০ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান। যার অর্ধেকের বেশি উদ্যোক্তা নারী। অন্যদিকে, সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা ৪ লাখের বেশি এফ-কমার্সের ৮০ শতাংশই পরিচালনা করছে নারীরা। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, বর্তমানে শুধুমাত্র ই-কমার্সে বছরে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এসব নারী উদ্যোক্তারা এখন বৈশ্বিক বাজারে তুলে ধরছেন দেশীয় পণ্য।
কয়েকজন নারী উদ্যোক্তা বললেন, আমরা যারা আসলে উদ্যোক্তা আছি সকলেই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সুফল ভোগ করছি। হাজারও নারী আছেন, যারা ঘরে বসে উদ্যোক্তা তৈরি করেছেন। একইসাথে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
ই-কমার্স ও এফ-কমার্স উদ্যোক্তার জন্য ঋণ প্রাপ্তি সহজ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন পদ্ধতি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নেতারা।
ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, পলিসি সংস্কারের একটু দরকার আছে। একইসাথে নতুন পলিসি তৈরির বিষয় আছে। সেটি হচ্ছে ক্রস বর্ডার পলিসি। যেটি নিয়ে আমরা ড্রাফটিংর কাজ করছি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ই-ক্যাব মিলে একটা ক্রস বর্ডার ড্রাফট করছি। যখন ক্রস বর্ডার পলিসি হয়ে যাবে, তখন অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে। ই-কমার্সের মাধ্যমে তখন অনেক ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং করা সহজ হয়ে যাবে।
এদিকে, টেলিকমিউনিকেশন খাতেও বাড়ছে নারী প্রযুক্তিবিদদের অংশগ্রহণ। দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বৈশ্বিক প্রযুক্তি দুনিয়াতেও গড়ে নিচ্ছে অবস্থান। তবে প্রযুক্তিবিদদের অভিমত, শহরাঞ্চলের নারীরা প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে যতটা এগিয়ে যেতে পারছে, সে তুলনায় পিছিয়ে আছে তৃণমূলের নারীরা। প্রযুক্তি গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করার পরামর্শ তাদের।
রবির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট অনামিকা ভক্ত বলেন, গ্রামে-গঞ্জে বা দুর্গম অঞ্চলে টেকনোলজি ব্যবহার করা কিংবা এটার সাথে মানিয়ে নেয়ার বিষয়ে একটা বাধা রয়ে গেছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে তারা স্বাচ্ছন্দবোধ করে না ততটা। তাতে এটার পুরোপুরি সুফল তারা নিতে পারছে না। এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা দরকার।
প্রযুক্তির উৎকর্ষতা যত বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে, কাজের ক্ষেত্রও তত বেশি উন্মোচিত হচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিল্পব মোকাবেলার জন্য তরুণীদের এখন থেকেই তৈরির পরমার্শ দিচ্ছেন প্রযুক্তিবিদরা।
/এমএন