ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে হেনস্তা ও যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ এনেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) শিক্ষার্থীরা তার কুশপুতুলে আগুন দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিভাগটির শতাধিক শিক্ষার্থী বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে থেকে হাফিজুল ইসলামের ছবি সম্বলিত কুশপুত্তলিকা হাতে মিছিল করেন। তারা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে গিয়ে কুশপুত্তলিকায় আগুন দেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হাফিজুল ইসলাম শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন কথাবার্তা বলতেন। তিনি পোশাক নিয়ে বাজে মন্তব্য করতেন। এছাড়া ছাত্রদের জোরপূর্বক সমকামিতায় বাধ্য করা, কথা না শুনলে মার্ক কম দেওয়া, মেয়েদের ব্যক্তিগত নম্বরে কল দিয়ে বিরক্ত করা, ফেক আইডি দিয়ে বিভিন্ন ছাত্রীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ কথোপকথন করতেন।
এর আগে ৭ অক্টোবর এসব অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবিতে প্রধান ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের কাছে তারা লিখিতভাবে ২৭ দফা অভিযোগ করেন ও মৌখিকভাবে ঘটনার বর্ণনা দেন। অভিযোগ তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দিতে মঙ্গলবার হাফিজুল ইসলাম ক্যাম্পাসে আসার কথা জানার পর শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি পালন করেন। তবে নিরাপত্তার শঙ্কার কথা জানিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে ওই শিক্ষক ক্যাম্পাসে আসেননি বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।
বিভাগটির শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা তাকে বিভাগ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তাকে বরখাস্ত করা হোক। তাকে যদি আজীবনের জন্য বরখাস্ত করা না হয়, আমাদের আন্দোলন-কর্মসূচি চলবে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, তদন্ত কাজে তাকে ক্যাম্পাসে আসতে আমরা বাধা দিচ্ছি না। আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তার প্রত্যেকটি অপকর্মের প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। তদন্তের মাধ্যমে তার এসব অভিযোগ অবশ্যই প্রমাণিত হবে।
অভিযোগের বিষয়ে ওই শিক্ষকের বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরীফ বলেন, অভিযোগ তদন্তে সোমবার আমরা কিছু শিক্ষার্থীদের নিয়েছিলাম। আজ মঙ্গলবার বিভাগের শিক্ষকদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত হাফিজুল ইসলামের ক্যাম্পাসে আসার কথা থাকলেও তিনি নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে সাক্ষাৎকারের জন্য আসেননি। তার সাক্ষাৎকার কীভাবে নেওয়া যায় আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেবো।
মুনজুরুল ইসলাম/জেডএইচ/এমএস