পাকিস্তান ক্রিকেটকে অনেক ভক্ত ‘সার্কাস’ বলে থাকেন। প্রায় সময় দেশটির ক্রিকেটে উদ্ভট সব ঘটনা দেখা যায়; সেখান থেকেই এমন মন্তব্য। এই যেমন গেল ২৮ ঘণ্টার মধ্যেই হয়েছে দুটি নাটকের মঞ্চায়ন। যার প্রযোজনায় ছিলেন ইহসানউল্লাহ।
পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) দল পাননি, তারই প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন ইহসানউল্লাহ। এক সাক্ষাৎকারে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর ওপর ক্ষোভও ঝেড়েছেন ইহসানউল্লাহ। এরপর স্থায়ীভাবে পিএসএল বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ইহসানউল্লাহ বলেছিলেন, ‘ভালো পারফরম্যান্স করা সত্ত্বেও কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি আমাকে বাছাই করেনি। এমনকি কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগও করেনি। আমি আর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে চাই না, পিএসএলকে বয়কট করছি।’
কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তের ওপর ২৪ ঘণ্টাও স্থির থাকতে পারেননি ইহসানউল্লাহ। কয়েক ঘণ্টা পরই ইউটার্ন নিয়েছেন। জানিয়েছেন, রাগের মাথায় আবেগতাড়িত হয়ে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এটি ২২ বছর বয়সী তরুণ পেসারের প্রকৃত সিদ্ধান্ত ছিল না।
অবসরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে কাল ‘জিও সুপার’কে ইহসানউল্লাহ বলেন, ‘আপনি জানেন, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো আমাকে দলে নেয়নি। তাতে পরিবার ও সাধারণ মানুষের কথাতে আমি বিরক্ত হয়েছি। সে কারণে আবেগতাড়িত হয়ে সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলাম। পিএসএলের এখনো ৪ মাস বাকি, আমি এ সময়ে কষ্ট করে যাবো, আল্লাহ চাইলে যারা এখন আমাকে নেয়নি, তারা পরে দলে নিতে পারে। সুতরাং পিএসএল থেকে অবসরের কোনো পরিকল্পনা নেই। আবেগতাড়িত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
নিজের ভুলও স্বীকার করেছেন ইহসানউল্লাহ। এর জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।
পাক তারকা বলেন, ‘পিএসএল শুরু হতে অনেক সময় বাকি, কিছু ঘরোয়া টুর্নামেন্টও সামনে আছে। গতকালের রাতের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছে ক্ষমা চাইছি। রাগের মাথায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল করেছি।’
ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করে সবার নজরে আসেন ইহসানউল্লাহ। ২০২৩ সালের পিএসএলে মুলতান সুলতানসের হয়ে খেলেন ডানহাতি এই পেসার। ১৪ ম্যাচে শিকার করেন ২৩টি। ২০২৩ সালের এপ্রিলেই ডাক পান জাতীয় দলে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই সিরিজেই (ওয়ানডে) কনুইয়ের ইনুজরিতে পড়েন তিনি।
চোটের সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াই করে গত মাসে ক্রিকেটে ফেরেন ইহসানউল্লাহ। তবে আগের মতো গতিতে বোলিং করতে পারছিলেন না তিনি। যে কারণে এ পেসারের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন মুলতান সুলতানসের মালিক আলী তারিন। তিনি বলেছিলেন, আগের মতো গতিতে ইহসানউল্লাহ বোলিং করতে পারবেন না। এরপরই গণমাধ্যমে এসে বিদ্রোহ করেন ইহসানউল্লাহ।
ইহসানউল্লাহ আশা করছেন, তিনি আবার ১৫০ কিলো গতিতে বোলিং করতে পারবেন। সেটি করতে পারলে হয়তো শেষ সময়ে পিএসএলে দলও পাবেন।
তরুণ পেসার বলেন, ‘স্পিডগান অনুসারে ঘণ্টায় ১৩০-৩৫ কিলোমিটারে বোলিং করছি, সেটা আসলে টিভিতে যা দেখা যায়, তার ১৪০ কিলোমিটার গতির সমান। এক দিন আগে পেশোয়ারে একটি ম্যাচে আমি আরও গতিতে বোলিং করার চেষ্টা করেছি, সেখানে ঘণ্টায় ১৪২ কিলোমিটারও ছুঁয়েছি। আমি ধীরে ধীরে উন্নতি করার চেষ্টা করবো।’
এমএইচ/এএসএম