বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সভা

0
0


বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে সভা করেছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। রোববার (১২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই সভা হয়।

সভায় বিসিআই সভাপতি বলেন, বিসিআই স্থানীয় সব শিল্পের উন্নয়নের পথে সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা নিরসনে কাজ করে চলেছে। দেশে বর্তমানে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে সব প্রতিষ্ঠানের সেলস ড্রপ করেছে। ঋণের উচ্চ সুদ হার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সবকিছু মিলিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান তার পূর্ণ সক্ষমতায় চলতে পারছে না উৎপাদন ৩০-৪০% পর্যন্ত কমে গেছে।

বিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের কোনো এক্সিট পলিসি নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের এক্সিট পলিসি থাকা দরকার।

এসময় গভর্নর বলেন, আমরাও মনে করি এক্সিট পলিসি থাকা দরকার। আর এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি এটা দ্রুত করা সম্ভব হবে।

বিসিআই সভাপতি বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পের নগদ সহায়তা পেতে আবেদনের পর ৯ মাস থেকে ১ বছর সময় লাগছে। যার ফলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান সমূহের সময় মতো তাদের অপারেশন কস্ট মেটানো তাদের কর্মীদের বেতনাদি পরিশোধ করতে পারছে না। আমরা মনে করি নগদ সহায়তা দেওয়ার সময়সীমা ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে নামিয়ে আনা প্রয়োজন।

ব্যাংকের সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার ফান্ডেড ১৫ শতাংশ এবং ননফান্ডেড ১০ শতাংশ করা হয়েছে এখানে টাকার অবমূল্যায়নকেও আমলে নেওয়া হচ্ছে না। আমার মনে হয় এটা আগের মতো ২৫ শতাংশে রাখা উচিত। আমরা ঋণ ক্লাসিফাইডের ক্ষেত্রে ৩ মাসে না এনে ৬ মাস এবং এসএস ৯ মাস রাখার প্রস্তাব করছি।

সিঙ্গেল কোম্পানি একটি সিঙ্গেল আইডেনটিটি, আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস হচ্ছে কেউ যদি গ্রুপ অব কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন করে তবে তাদের গ্রুপ হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে গ্রুপ হিসেবে নিবন্ধন না করা হলেও ৩-৪ জন পরিচালক কমন হলে তাদেরকে গ্রুপ হিসেবে দেখা হয়। এবং কোনো একজন পরিচালক কোম্পানি থেকে বের হয়ে গেলেও সে অন্য কোথাও যদি কোন ভাবে সিক হয়ে যায় তবে তার লায়াবিলিটি নিতে হয়। এটার একটি ক্লারিফিকেশন দরকার।

সভায় উপস্থিত থেকে নিজ নিজ সেক্টরের সমস্যা সমূহ তুলে ধরে বক্তব্য দেন আনোয়ার হোসেন, প্রশাসক, বিজিএমইএ, নাজমুল হাসান সোহেল, ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, মো. হাসান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিটি গ্রুপ, মতিউর রহমান, চেয়ারম্যান, উত্তরা মোটর করপোরেশন লি., আব্দুল হক, সভাপতি, বারভিডা, আহসান খান চৌধুরী, পরিচালক, বিসিআই ও চেয়ারম্যান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, শাদাব আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেড, মঈনুল ইসলাম স্বপন, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বিসিএমইএ ও ভাইস চেয়ারম্যান, মন্নু গ্রুপ, প্রীতি চক্রবর্তী, ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি, বিসিআই, মোহাম্মদ ইউনুস, সহ-সভাপতি, বিসিআই, অমিতাভ চক্রবর্তী, উপদেষ্টা, সিটি গ্রুপ, ও মো. শাহরিয়ার, সভাপতি, বিজিএপিএমইএ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিসিআইর প্রতিনিধিদলের বক্তব্যের পর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল লক্ষ্য এখন মুদ্রাস্ফীতি কমানো। আশা করি আগামী জুন নাগাত মুদ্রাস্ফীতি ৭-৮ এর মধ্যে থাকবে। বেসরকারি খাতকে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য সুপারিশ করছি যাতে বেসরকারি খাতে অর্থ প্রবাহ বাড়াতে পারি। কিন্তু ডিপোজিট বাড়ছে না। ডিপোজিট গ্রোথ ৭%।

তিনি আরও বলেন, অর্থ প্রবাহ বাড়াতে হলে ডিপোজিট বাড়াতে হবে। বর্তমানে ডলারের ক্রাইসিস নেই। অর্থনীতি স্বাভাবিক হচ্ছে, কিন্তু একটু সময় লাগবে। আগামী রমজানে যাতে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত না হয় সে দিকে আমাদের লক্ষ্য আছে এবং আমরা সে লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি মনে করি দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য বন্ড মার্কেটে যেতে হবে। আমাদের করপোরেট বন্ডের জন্য কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পূর্ণ সহযোগিতা করবে।

এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।