সূর্য
আমি যতটাই সূর্যের কাছে যাই
সূর্য ততটাই দূরে সরে যায়
ঠিক যেন তোমার মতো—
তুমি সূর্যের চেয়েও দূরে সরে গেছো
তবুও আমি হাঁটছি—
রক্তাক্ত করুণ পথে ব্যাকুল হৃদয়ে
তাই যারা সূর্যোদয় দেখবে বলে গিয়েছিল
তারা ফিরে গেল অভিনব অভিঘাত দেখে।
আমাদের সুখী দিনের পাণ্ডুলিপি
আমাদের রক্ষিত বাসনা গুলি
পথিকের পায়ের তলায়
ধুমড়ে-মুচড়ে গেছে
সেইসব অমৃত আস্বাদ
ফিরবে না—জানি
তবুও হাঁটছি তবুও…!
***
কথা কও
কথা কও
মৃদুস্বরে
যেমন কথা কয় পাখি
নিরালা দুপুরে।
কথা কও
সকাল-সন্ধ্যা সাঝে
যেন আমার মনে বাজে।
কথা কও
প্রেমে আলাপনে
উথালা দিনের
কথা কও
অবিরাম
যেমন কথা কয় নদী
কথা কয় জল।
কথা কও
সুরে সুরে
যেনো গান হয়ে যায়।
কথা কও
বৃক্ষের মতো
যেনো সবুজ হয়ে যায়।
কথা কও
অনন্তকাল
যেনো লীন না হয়।
কথা কও
রবীন্দ্র সুরে সুরে
যেন মেঘপুঞ্জ হয়
সময়ের রেখায়
দুঃখ মুছে যায়।
কথা কও
প্রেম ও বিরহের
কথা কও
রোমিও জোলিয়েটের
নয়তো আমাদের বিচ্ছেদের
আমাদের বিষাদও দিনের।
***
তোমার শরীরের অমৃত ঘ্রাণ
কোনো একদিন
শরতের নিঃশব্দ শিশিরের ভোরে
সে এক ক্ষঃণকালের কথা
তোমার শরীরের অমৃত ঘ্রাণ
আজও নিবিড় করে,
কম্পিত করে হৃদয়।
মনে পড়ে—অজোপাড়াগাঁয়ে
কোনো এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপে দুপুরে
তোমার পায়ের ছাপে ছাপ এঁকে
আনমনে কতো যে হেঁটেছি !
তখন কল্পলোকে তোমার তুলতুলে নরম হাত দুখানি তুষারের মতন
শান্ত করে দিয়ে গেছে আগুনে ভরা বিক্ষুব্ধ হৃদয়।
মেঘ ও পাখিরা উড়ে যায়
উড়ে যায় কি তোমার কাছে?
শারদ এলে—
আজও কি ডাকো তুমি আমারে?
আজও কি উচ্ছ্বসিত স্বরে
পত্র পল্লবের মতো নিবিড় করে
কথা কও?
আজও কি আমাকে
তুমি সেদিনের মতো ফেরত যাও !
শরতের শুভ্র মেঘের মতোন তুমি উড়ো
শরতের ফোঁটা ফোঁটা শিশিরের মতো
টুপটাপ আমার হৃদয়ে পড়!
এসইউ/জিকেএস