নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিমকে অবশেষে বান্দরবানের রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের সকল টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও সার্টিফিকেট বাণিজ্যসহ অনিয়ম দুর্নীতির নানা অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বদলির বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফের বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) স্বাক্ষরিত চিঠিতে বদলির বিষয়টি জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিমকে (কোড-১২২০৮৭) বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরএমও হিসেবে (পদের আইডি-৯১২১) বদলি করা হলো।
এদিকে আরেক চিঠিতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক সার্জন (ইএনটি) রাজীব আহমেদ চৌধুরীকে (কোড-১২৬১৮৭) ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
চিঠিগুলোতে আরও বলা হয়, এ প্রজ্ঞাপন জারির তিন কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্বভার হস্তান্তর করবেন। অন্যথায় চার দিনের দিন থেকে তারা সরাসরি অবমুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) হিসেবে যোগদান করেন। তিনি নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর আস্থায় থেকে বিভিন্ন টেন্ডার নিয়ন্ত্রণসহ টাকার বিনিময়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট বাণিজ্য করে আসছিলেন। এমনকি প্রতিটি থানা পুলিশও বিভিন্ন প্রতিবেদন নিতে তাকে টাকা দিতে হতো।
এছাড়াও তিনি নিয়মিত অফিস না করার অসংখ্য অভিযোগ ছিল। অন্যদিকে আসলেও রোগীর সেবা না দিয়ে অফিস সময়ে চেয়ারে বসে ঘুমাতেন। ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট ‘লাইনে দাঁড়িয়ে সেবাপ্রার্থীরা, নাকডেকে ঘুমাচ্ছেন মেডিকেল কর্মকর্তা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাগো নিউজ। পরে একই বছরের ১৪ নভেম্বর হাসপাতালের সেবার মান বাড়াতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।
সর্বশেষ ছাত্র আন্দোলনের সময় স্বৈরাচারদের সমর্থন দিয়ে আহত ছাত্র-জনতাকে চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আরএমও ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিমের বিরুদ্ধে। এছাড়া চলতি বছর ৩০ আগস্ট বন্যার সময়ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবায় অবহেলার অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
জানতে চাইলে আরএমও ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে সরকার যখন যেখানে ভালো মনে করে পাঠাবে আমরা চাকরি করতে বাধ্য।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এএসএম